নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ২

    ফরিদপুরের নগরকান্দায় আ.লীগের দুইপক্ষে সংঘর্ষের সময় গুলিতে দুইজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।

    শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের কাইচাইল মধ্যপাড়া দারুল উলুম মাদ্রাসার কাছে এ ঘটনা ঘটে।

    এলাকাবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ওরফে ঠান্ডুর সাথে তার চাচাতো ভাই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়ের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ওই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি চলে আসছিল। এর জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

    এ ঘটনায় নিহত দুইজন ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থক। তারা হলেন ইউপি চেয়ারম্যানের চাচা মৃত আবু বক্করের ছেলে রওশন আলী মিয়া (৫২) ও তার ভাতিজা রায়হান মিয়ার ছেলে তুহিন মিয়া (২৫)।

    গুলিতে আহতদের প্রথমে নগরকান্দা উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সাতজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার পর জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    এ ঘটনায় আহতরা য়হানউদ্দিন মিয়া (৬৫), আনিস মীর (২০), গোলাম রসুল বিপ্লব (৩০), গোলাম মওলা (৩০), আবুল কালাম (৩৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে আনিস মিয়া (২৪), ফারুক মাতুব্বর (৪০), চুন্নু মিয়া (৪৮), সুমন মিয়া (২৮) ও বাবলু মিয়াকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

    এ ঘটনা নিয়ে দুইপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু বলেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হানিফ মিয়া ও তার ভাই হাসান মিয়া একটি মাইক্রোবাসে করে এলাকায় আসেন। তারা ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে কোরবানীর আয়োজন নিয়ে পরামর্শরত তার সমর্থকদের গাড়ির মধ্যে থেকেই নির্বিচারে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার দুই সমর্থক নিহত এবং আটজন আহত হন।তিনি বলেন, হানিফ মিয়া নিজস্ব শর্টগান থেকে এ গুলি করেন।

    কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হানিফ মিয়ার ভাই জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক হাসান মিয়া বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বিরোধের কারনে তারা দীর্ঘদিনধরে এলাকাছাড়া। শনিবার তিনি ও তার ভাইসহ পাঁচজন একটি প্রাইভেটকার নিয়ে এলাকায় আসেন কোরবানী দিতে। মাদ্রাসা এলাকায় এলে চেয়ারম্যানের চাচা রওশন, রুস্তম, রায়হান, মাওলা ও বিপ্লবসহ ১০ /১২ জন লোক তাদের বাধা দেয়। তারা গাড়িতে হামলা করে গাড়িটি ভাংচুর করে এবং তাদের উপর কাঠ, লাঠি নিয়ে হামলা করে। তারাও কাঠলাঠি কেড়ে নিয়ে পাল্টা হামলা করেন। একসময় গুলির ঘটনা ঘটে।

    তিনি দাবি করে বলেন, এ সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি তার ভাই হানিফসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তারা ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হবেন।

    ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাইচাইল ইউনিয়নে আ.লীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

    বিএম/এমআর