বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলে সেটি হত বিশ্বের বড় মানবিক ট্র্যাজেডি
    মিয়ানমারে ফিরতে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা চায় রোহিঙ্গারা

    বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গারা আবারও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা ছাড়া মিয়ানমার ফিরতে অনীহা প্রকাশ করেছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গার অংশগ্রহণে বিশাল সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা তাদের দাবি পুনঃব্যক্ত করেন।

    রোববার (২৫ আগস্ট) উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্পে পৃথক পৃথক সমাবেশ করে রোহিঙ্গারা।

    রোববার সকাল থেকে উখিয়ার ২০টি ক্যাম্প থেকে হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুরা মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থলে যোগদান করে।

    কুতুপালং মেগা ক্যাম্পের বর্ধিত -৪ নং ক্যাম্পের মাঠে বর্ষপূর্তি সমাবেশের আয়োজন করে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস বা এআরএসপিএইচ। সমাবেশে উক্ত সংগঠনের রোহিঙ্গা নেতারা বক্তব্য দেন।

    ‘উই আর রোহিঙ্গা, নট বাঙালি’ স্লোগানে কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পের বর্ধিতাংশে সকাল থেকে সমবেত হন লাখো শরণার্থী। রোহিঙ্গাদের নিজস্ব রীতির সাদা পোশাকে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তারা। হাতে ছিল ব্যানার-পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড।

    সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া সমাবেশটি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি করা হয় সকাল সাড়ে ১০টায়।

    এআরএসপিএইচ এর চেয়ারম্যান মাস্টার মহিবুল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমার ফিরতে চাই। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, মিয়ানমারে স্বাধীন ও মর্যাদার সাথে নিজ নিজ ঘর বাড়িতে বসবাসের নিশ্চয়তা ফেলে মিয়ানমার ফিরে যেতে প্রস্তুত বলে জানান।

    সমাবেশে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ‘নাটক’ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা।তারা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারসহ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত, ভিটেবাড়ি পুনরুদ্ধার, আন্তজার্তিক নিরাপত্তা জোরদার ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দাবি জানান।

    অন্যদিকে, কুতুপালং ২ নং ক্যাম্পের ডি- ব্লকের মাঠে আরেকটি বর্ষপূর্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রোহিঙ্গা রিফুউজি কাউন্সিলের আয়োজনে সমাবেশে ঐ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

    সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, ডাক্তার জাফর আলম বলেন, বাংলাদেশ সরকার যদি ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিত তাহলে সেটিই হত বিশ্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানবিক ট্র্যাজেডি।
    বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের প্রাণ রক্ষা করায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী চিরদিন বাংলাদেশ ও স্থানীয় লোকজনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

    তারা বলেন, আমরা আশাবাদী বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যেভাবে উদারতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছে সেভাবে রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করে মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর আশা ব্যাক্ত করেন।

    বিএম/এমআর