৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবেঃ প্রধানমন্ত্রী

    onion

    বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘৫০ হাজার মেট্রিন টন পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। এই পেঁয়াজ চলে এলে টিসিবির মাধ্যমে তা জেলায় জেলায় পাঠানো হবে।’

    বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের ৫ম অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কথা হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে পেঁয়াজের কেজি ৮-১০ টাকার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটি মাত্র একটি রাজ্যে। তারা অন্য কোথাও পেঁয়াজ যেতে দিচ্ছে না বলেই কম দাম। আর ভারতবর্ষে পেঁয়াজ বর্তমানে একশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাদেরই পেঁয়াজের অভাব। তারা বিদেশ থেকে আমদানি করছে।’

    বাংলাদেশের পেঁয়াজের পরিস্থিতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে পেঁয়াজ কিন্তু আছে। দেখা যাচ্ছে, পেয়াজ পচে যাচ্ছে, কিন্তু বাজারে ছাড়া হচ্ছে না। দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা টিসিবির মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজ পাঠিয়েছি, ৪৫-৫০ টাকার মধ্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসছি। পৃথিবীর আর কোথায় পেঁয়াজ পাওয়া যায়, সেটার খোঁজ নিয়ে আনার ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টনের এলসি খোলা হয়ে গেছে। সেখানে লোকও চলে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে। আমি নির্দেশ দিয়েছি, এগুলো আসার সঙ্গে সঙ্গেই টিসিবি সেটা নিয়ে নেবে, সব জেলায় জেলায় ট্রাকে করে এই পেঁয়াজ চলে যাবে।  আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন আছি; যাতে এই সমস্যাটা না হয়।’

    দেশে একটা সিজনে পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের গবেষকরা বারোমাসি পেঁয়াজের বীজ উদ্ভাবন করেছেন। এটা ভবিষ্যতে আমরা বাজারজাত করবো। তখন কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। আমাদের নিজেদের চাহিদামতো উৎপাদন করতে পারবো।’

    শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড আপগ্রেড করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড দেওয়া হয়েছে। আর এখন বেতন কিন্তু তারা বেশিই পান। আমরা সরকারে আসার পর যত বেতন বাড়িয়েছি, কোনও সরকার তা পারেনি। শ্রমিক থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে ব্যাপকভাবে বেতন বাড়িয়েছি। প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। বাকি যারা আছে, তারা শর্তগুলো পূরণ করলে সঙ্গে সঙ্গে এমপিও হয়ে যাবে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের পাশাপাশি ভারতেও এখন হচ্ছে। অল্প খরচে এখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। পরমাণু বিদ্যুতের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও আমাদের চুক্তিতে আছে। তারা এই বর্জ্য রাশিয়ায় নিয়ে যাবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে আমরা তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আমাদের জনশক্তিকে বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করছি। দক্ষ জনশক্তি তৈরির প্রক্রিয়া চলমান থাকবো।’

    তিনি বলেন, ‘রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পর আমরা আরও একটি পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র করবো। এজন্য আমরা দক্ষিণে দ্বীপ খুঁজে বেড়াচ্ছি। আমরা দক্ষিণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি করবো। কারণ দক্ষিণের জনগণ বেশি বঞ্চিত।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছি। কিছু লোকের তা পছন্দ হয় না। দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করতে পারলেই তারা খুশি হয়—এমন একটি চক্র আছে। না হলে পদ্মা সেতুর মতো প্রজেক্টের টাকা বিদেশে গিয়ে যারা বন্ধ করে, তারা দেশের কত বড় শক্রু তা বিবেচনা করতে হবে। তারা জনগণের স্বার্থ দেখে না। নিজেদের স্বার্থটা দেখে। তবে সব চক্রান্ত ভেদ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এগিয়ে যাবো।’