অনিয়ম ও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি রোধে চট্টগ্রামে সুজনের হুশিয়ারী

    চট্টগ্রাম মেইলঃ জনগনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম যাতে কোন অজুহাতেই বৃদ্ধি না হয় সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আহবান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ ৩রা জানুয়ারী ২০২০ইং শুক্রবার সকাল ১১ টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে নাগরিক উদ্যোগের এক বিশেষ সভায় তিনি এ আহবান জানান।

    এ সময় সুজন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের সাধারন মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ঠিক সে সময়ে এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে অহেতুক জনসাধারনকে ভোগান্তিতে ফেলে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাদের এ ষড়যন্ত্রে জনমনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। যখনই দেশে একটি স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করে তখনই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে সেই সকল অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা এখন থেকেই জনগনের নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের এহেন অব্যবসায়ী সূলভ কর্মকান্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলেন হঠাৎ করে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। কি কারণে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি করা হবে তা জনগন জানতে চায়। তিনি আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম যাচাই পূর্বক যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়াই যদি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয় তাহলে সে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্যও সরকারের উর্দ্ধতন মহলের নিকট বিনীত অনুরোধ জানান। তিনি আসন্ন রমজানে জনগন যাতে কোন প্রকার ভোগান্তি কিংবা হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই রোজাদারদের ব্যবহার্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী যেমন চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা, খেজুর, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, লবন, মরিচ এবং মসলা সহ অন্যান্য সামগ্রীর প্রয়োজনীয় মওজুদ নিশ্চিত করার জন্য বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট বিশেষ আহবান জানান। যাতে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কোন অজুহাতেই রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে না পারে। এসব পণ্যের নূন্যতম মূল্য নির্ধারণ করে রাখার জন্যও সরকারের নিকট অনুরোধ জানান তিনি। আর যৌক্তিক কারণে যদি এসব পণ্যের দামও বৃদ্ধি হয় তাহলে ভর্তুকি কিংবা প্রণোদনা দানের মাধ্যমে এসব পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার উদাত্ত আহবান জানান জনাব সুজন।

    তিনি আরো বলেন, নতুন বছরে গ্রাহকদের প্রত্যাশা তাদের দীর্ঘদিনের কাংখিত গ্যাস সংযোগ প্রদান করবেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড। এভাবে বছরের পর বছর গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গ্যাস সংযোগ প্রদান না করাটা অন্যায়। তিনি অবিলম্বে নগরীতে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুরো শহরকে প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তিনি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দ বারবার তাগাদা দিয়ে আসলেও ওয়াসার বিরুদ্ধে গ্রাহকদের গড় বিলের অভিযোগ বরাবরই রয়ে গিয়েছে। তিনি ওয়াসার গ্রাহকদেরও প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান।

    তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন সরকারের বার বার নির্দেশনা সত্বেও কিছু সংখ্যক বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্টান জোর পূর্বক শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এসব অবৈধ অর্থ আদায়ের মাধ্যমে তারা একদিকে সরকারের আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করছে অন্যদিকে আয়কর ফাঁকির মাধ্যমে অবৈধ কালো টাকার পাহাড় গড়ছে। এসব বেসরকারী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান তিনি।

    এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, হাফেজ মোঃ ওকার উদ্দিন, শেখ মামুনুর রশীদ, এ.এস.এম জাহিদ হোসেন, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, মোঃ শাহজাহান, শিশির কান্তি বল, সোলেমান সুমন, মোঃ জাহাঙ্গীর, মোঃ নাছির, হাসান মোঃ মুরাদ, রাজীব হাসান রাজন, মোঃ ওয়াসিম, আব্দুল জাহেদ মনি, ফেরদৌস মাহমুদ আলমগীর, মনিরুল হক মুন্না প্রমূখ।