সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় দুই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনঃ আটক-৪

    বাংলাদেশ মেইল ::

     

    সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় দুই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনঃ আটক-৪
    ————————————————————————
    স্টাফরিপোর্টারঃ
    সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় দুই যুবককে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার ঘটনায় সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জেড জেড তাজুল হুদার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সলঙ্গা থানার নলকা ইউনিয়নের কেসিফরিদপুর গ্রামে।

    সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজ এর সুত্রধরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,সলঙ্গা থানার নলকা ইউনিয়নের কেসিফরিদপুর গ্রামের দরিদ্র হোসেন আলীর পৈত্রিক বসতবাড়ীসহ জায়গা-জমি নিয়ে একই গ্রামের প্রভাবশালী দলিউর রহমান দুলাল,হাফেজ আলী,খায়রুল ইসলাম,কামরুল ইসলাম,ওমর ফারুক,আব্দুল হালিম ও মাহফুজুর রহমানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে প্রভাবশালী দলিউর রহমান দুলালের নেতৃত্বে উল্লেখিত সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্রটি বহিরাগত ভাড়াটে লোকজন সাথে নিয়ে দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দরিদ্র হোসেন আলীর বসতবাড়ী জোর পুর্বক দখল করার চেষ্টা চালায়।

    এসময় হোসেন আলীর ছেলে সুলতান মাহমুদ(৩০) ও রুবেল হোসেন বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে প্রভাবশালী দুলাল। এক পর্যায়ে তিনি ওই দুইজনকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বাঁধার জন্য তার লোকজনকে নির্দেশ দেন। এসময় তার নির্দেশে উল্লেখিত ব্যক্তিরা সুলতান মাহমুদ ও রুবেল হোসেনকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বাঁধে এবং মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। এতেও তারা ক্ষ্যান্ত না হয়ে পরবরতীতে হোসেন আলীর বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে হোসেন আলীর স্ত্রী আমিনা খাতুন (৫০)কে মারপিট এবং বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এদিকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ এক সাড়াশি অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকায় মৃত্যু হরমুজ আলীর ছেলে দলিউর রহমান দুলাল (৪৫),গোলাম কিবরিয়া (২৭),মৃত্যু হাছেন আলীর ছেলে আব্দুল হালিম(২৫), ও আব্দুল খালেকের ছেলে সমন মাহমুদ (২২)কে গ্রেফতার করেছে।

    এঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হোসেন আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। এদিকে দুই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন এবং নির্যাতনের ঘটনায় তাৎক্ষনিক ভাবে ৪ জনকে গ্রেফতারের সংবাদ শুনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়গঞ্জ সার্কেল) ইমরান রহমান থানায় এসে যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জেডজেড তাজুল হুদাসহ অভিযানে অংশ গ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং গ্রেফতারকৃতদের দ্রুত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

    এব্যাপারে সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জেডজেড তাজুল হুদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,নির্যাতনের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজন। কেননা সরকার যখন সারাদেশ করোনা সংক্রমনরোধে লকডাউন ঘোষনা করেছে ঠিক সেই সময়ে এধরনের ঘটনা কখনোই মেনে নেওয়া যায়না। আমরা সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছি এবং অন্য আসামীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে অপরাধী যেই হোক তার কোন ক্ষমা নেই।