কবি সুফিয়া কামালের ১১০ তম জন্মদিন আজ

    বাংলাদেশ মেইল :: 

    দেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামাল। প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের এই স্বপ্নদ্রষ্টার ১১০ তম জন্মদিন আজ। এই মহীয়সী নারী আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে সংগ্রাম করেছেন।

    সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। কবির জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

    বাণীতে তারা নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। মহীয়সী এই নারী ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান।

    তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন। কবি বেগম সুফিয়া কামালের সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। শিশুতোষ রচনা ছাড়াও দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ সংস্কার এবং নারীমুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার লেখনী আজও পাঠককে আলোড়িত ও অনুপ্রাণিত করে।

    ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে তার জন্ম। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি দীর্ঘ কর্মজীবনে সুফিয়া কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৫৬ সালে ‘কচি-কাঁচার মেলা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬১ সালে ছায়ানটের সভাপতি, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের সময় মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি, ১৯৭০ সালে মহিলা পরিষদ গঠন এবং ওই সময়ে অসহযোগ আন্দোলনে নারী সমাজের নেতৃত্ব দেন।

    সুফিয়া কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা হোস্টেলকে ‘রোকেয়া হল’ নামকরণের দাবি জানান। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর সুফিয়া কামাল মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জীবিতকালে কবি সুফিয়া কামাল প্রায় ৫০টি পুরস্কার লাভ করেন। যার মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২), লেনিন পদক (১৯৭০, সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে), একুশে পদক (১৯৭৬), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (১৯৯৫) ও স্বাধীনতা দিবস পদক। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে ‘তমসা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিলে কবি সুফিয়া কামাল তা প্রত্যাখ্যান করেন।