৮ জনের মৃত্যু
    বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ২২ লাখ মানুষ

    বাংলাদেশ মেইল ::

    করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৮টি জেলায় বিস্তৃত হয়েছে বন্যা। এতে পানিবন্দি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাড়ে ২২ লাখ মানুষ। বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। প্রতিমন্ত্রী জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৯২ উপজেলার ৫৩৫টি ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭৬টি পরিবারের ২২ লাখ ২৬ হাজার ৪৭২ জন। বন্যাজনিত কারণে মারা গেছেন ৮ জন। মৃতদের মধ্যে জামালপুরে চারজন, লালমনিরহাট একজন, সুনামগগঞ্জে একজন, সিলেট একজন ও টাঙ্গাইলে একজন।

    তিনি বলেন, ১২ জেলায় বেশি বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। সেসব এলাকায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে ৩০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হলেও এর মধ্যে ১৯৭টি টিম কাজ করছে। জনগণের নিরাপত্তায় এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

    ডা. এনামুর রহমান বলেন, খাবার রান্না করে আশ্রয়কেন্দ্রে দেয়া হচ্ছে। এসব খাবার তৈরিও বিতরণ কাজে সহায়তার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, যতটা মনে করা হয়েছিল এই বন্যা ততটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে, যেসব নদীর পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করবে এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল হবে। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এই সময়ে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। এ বছর আগে থেকেই ধান কাটা শেষ হওয়ায় বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়নি জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট, ডাল ও শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। আমন ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয় উঁচু জায়গায় আমনের বীজতলা করে কৃষকদের বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।