বাংলাদেশমেইল: বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে আজ। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে থাকা নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের মেয়াদও শেষ। মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম জানান, তার জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার আবেদন করা হবে।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান মিয়ার আদালতে শুরু হয় এ যুক্তিতর্ক।
এ মামলায় ৭ নম্বর আসামি ও রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে তার আইনজীবীরা এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এর আগে এ মামলার নয় আসামির পক্ষে-বিপক্ষে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
মামলার আইনজীবী অ্যাড মজিবুল হক কিসলু জানান, ২৬ ও ২৭ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ১০ আসামির বিরুদ্ধে যুক্ততর্ক উপস্থাপন করা হয়। ৩১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মামলার ৯ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক করেন তাদের আইনজীবীরা।
তিনি আরও জানান, সাক্ষীদের হুমকি দেয়ার অভিযোগে গত ৮ জানুয়ারি মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন করেন তারা। এরপর দফায় দফায় সময় নিয়েছে আসামিপক্ষ। যুক্তিতর্ক শেষে মিন্নির জামিন বাতিলের শুনানির আবেদন করবেন তারা।
এ মামলায় ৭৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের দিন ধার্য করবেন আদালত। গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুই ভাগে বিভক্ত চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর গত ১ জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে রিফাত ফরাজি, রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, টিকটক হৃদয়, হাসান বন্ড, মুসা বন্ড, ও রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বিরুদ্ধে ৩৪ ও ৩০২ ধারা। আর রাফিউল ইসলাম রাব্বি, কামরুল ইসলাম সাইমুন আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ২১২ ও ১২০ বি ১ ধারায় এবং আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ১২০ বি ১ ধারায় সাগরের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এরপর রিফাতকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর ওই দিন বিকেলে তিনি মারা যান। পরদিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্রধান সাক্ষী করা হয় মিন্নিকে।
পরে গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ২৪ জনের নামে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। মো. মুসা নামের এক আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান।
রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন: রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন।