দুদকের অভিযান: কক্সবাজারের ব্যাংক থেকে টাকা সরানোর হিড়িক

    মোহাম্মদ শফিক, জেলা প্রতিনিধি ::

    কক্সবাজারে ব্যাংকে জমানো টাকা উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। দুদক চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে ঝামেলা এড়াতে অনেকে তাদের জমানো টাকা সরিয়ে নিচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ ব্যক্তির একাউন্ট থেকে প্রায় ২৮ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুদক। শুধু তাই নয় এ ধারাবাহিক অভিযানে গতকালও মিজান নামের এক ব্যক্তি থেকে ৪ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মিজান কক্সবাজার শহরতলির ঝিলংজা ইউনিয়ের উত্তর মহুরী পাড়ার মৃত আব্দুল গণির জেলে। দুর্নীতি দম কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশ্ব¯’ সুত্রে এই তথ্য নিশ্চি করেছেন।

    সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকজন ভিআইপি রাজনৈতিক জেলা পর্যায়ে ও মধ্যমসারির নেতা, জনপ্রতিনিধি, দালাল, প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ ও বিভিন্ন নামে গ”িছত ব্যাংক একাউন্ট থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছে। আবার অনেকে নিকট আত্বীয় স্বজনের নামে একাউন্ট করে টাকা সরিয়ে ফেলছে। এতে কিছু ব্যাংক নগদ টাকার সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানে ব্যাংক একাউন্ট জব্ধ করাকে নিয়ে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

    জানা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে অনেকে নগদ টাকা উত্তোলন করছে। টাকা উত্তোলনের হিড়িক তালিকায় ভিআইপি, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ির একাউন্ট রয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের দাবি ইদানিং দূর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানে কিছু ব্যাংকে কতিপয় ব্যক্তির একাউন্ট জব্ধ করায় অনেকে ভয়ে নগদ টাকা তুলে নিচ্ছে। তবে নগদ টাকার পরিমান বেশি হওয়াতে ব্যাংকে নগদ টাকার সঙ্কট হচ্ছে। ব্যাংক থেকে জানা গেছে বিশেষ করে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে যাদের নামে টাকা এসেছে, বা যার টাকা জমা রেখেছে, তারাই বেশি নগদ টাকা তুলছে। এছাড়া জেলার অনেকে গুরুত্বপূর্ণ লোকজন তাদের ব্যাংকে থাকা টাকা নিটক আত্বীয় স্বজনের নামে হিসাব খুলে সেখানে পাঠাচ্ছে। তবে নগদ চাহিদাই বেশি। পরিচয় গোপন রেখে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুদক সব চেয়ে বেশি ব্যাংক একাউন্ট জব্ধ করেছে আমাদের শাখায়। তাই এখানে আগে থেকে থাকা অনেক ভিআইপি এবং ব্যবসায়িদের টাকা দ্র“ত উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা বেশ সমস্যায় পড়েছি।

    এদিকে ওয়ান ব্যাংকের এক কর্মকর্তা তাদের শাখায়ও একই ঘটনা ঘটছে বলে স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে আইনজীবি মাহবুব আলম বলেন, যে কোন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানকে নাগরিক হিসেবে আমরা স্বাগত জানাই। তবে দেখা যাচ্ছে সব কিছু শেষ হয়ে যাবার পরে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে, যখন আর কিছুই করার থাকেনা। এলএ শাখা থেকে গত কয়েক বছরে হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। অনেক মানুষকে দেখেছি নিজের জমি দিয়ে ক্ষতিপূরনের টাকার জন্য মধ্যরাত পর্যন্ত- কোর্ট বিল্ডিংয়ে বসে আছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা সীমাহীন শোষন করেছে। তাই এর একটা সুষ্ট বিচার হওয়া দরকার। বড় বাজার এলাকার নাছির নামে এক ব্যবসায়ি বলেন, কক্সবাজারে সুদি ব্যাবসা নিয়ন্ত্রন করা গেলে অনেক অপরাধ কমে আসবে। আমার জানা মতে অনেক ব্যবসায়ি বাধ্য হয়ে সুদে টাকা নিয়ে এখন পথের ফকির হয়ে গেছেন। যে দোকানের জন্য সুদে টাকা নিয়েছিল, সেই দোকান সুদি ব্যবসায়ি দখল করে নিয়েছে।