বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে পণ্য খালাসের চেষ্টা!

    বাংলাদেশ মেইল ::

    মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নকল ছাড়পত্র দিয়ে সেই চালান খালাসের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ঢাকার একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির নাম মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ। অনলাইনে যাচাইয়ের সময় যাতে জাল ছাড়পত্র ধরা না পড়ে সেজন্য প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের আদলে ভুয়া ওয়েবসাইটও খুলেছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

    চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নূর-এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের চেষ্টার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মুদ্রা পাচার, ফৌজদারি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

    কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ চলতি বছরের এপ্রিলে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি ওলিভ ওয়েল আমদানির ঘোষণা দিয়ে মালয়েশিয়া থেকে চালানটি নিয়ে আসে। ২৩ এপ্রিল তাদের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খান এন্টারপ্রাইজ চালানটি খালাসের জন্য কাস্টমস হাউসে বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল করে। কিন্তু সন্দেহজনক পণ্যের উপস্থিতির তথ্য থাকায় কাস্টমসের এআরআই শাখা চালানটির খালাস স্থগিত করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে।

    কায়িক পরীক্ষায় দেখা যায়, ঘোষণা দেওয়া পণ্যের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ শুল্কের ২১ হাজার ৬০ কেজি শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ নিয়ে এসেছে। পরে এ ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মিথ্যা ঘোষণার অপরাধে আমদানিকারককে মোট ৭৬ লাখ টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি জরিমানা দিয়ে খালাস করতে হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ক্লিয়ারেন্স পারমিট’ বা ছাড়পত্র নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এখানেও জালিয়াতির আশ্রয় নেয় মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ। ১১ অক্টোবর আমদানিকারক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নকল ক্লিয়ারেন্স পারমিট কাস্টমসে দাখিল করে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের আদলে একটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে। পরে ওই নকল ছাড়পত্রে তৈরি করা সেই ভুয়া ওয়েবসাইটের ঠিকানাও লিখে দেয়।
    এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার নূর-এ হাসনা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির দাখিল করা ক্লিয়ারেন্স পারমিট নিয়ে শুরুতেই আমাদের সন্দেহ হয়। তখন আমরা ক্লিয়ারেন্স পারমিটে যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেটি যাচাইবাছাই করে দেখি ওয়েবসাইটটি ভুয়া। ওই ছাড়পত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে উপসচিবের স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে, আমরা তার সঙ্গে কথা বলি। তিনি নিয়েছেন, ওই ক্লিয়ারেন্স পারমিটটি ভুয়া। এ ধরনের কোনও ছাড়পত্রে তিনি স্বাক্ষর করেননি।’
    অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজের মালিক আ. জলিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।