বিশ্বব্যাংকের কাছে ৬৩৬২ কোটি টাকা চাইলো বাংলাদেশ

    বাংলাদেশ মেইল ::

    করোনার টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব মানুষের জন্য করোনার ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বাজেট
    সাপোর্ট হিসেবে আরো ২৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশী টাকায় যা ৬ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ৮৪.৮৩ টাকা ধরে)।
    অর্থমন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২২শে অক্টোবর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এর বার্ষিক সভা ২০২০-এ অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই ঋণ সহায়তা দিতে অনুরোধ জানান।
    বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ১৯-এর আওতায় বরাদ্দ অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে ভ্যাকসিন কেনা, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। ভার্চ্যুয়াল সভায় অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অর্থ সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আলোচনায় অংশ নেন।
    সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের জন্য ঋণ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যাধিক্যের দিক দিয়ে ৩য় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যার ভিত্তিতে ন্যায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হার্টউইগ শেফারের সহযোগিতা কামনা করেন।
    সভায় করোনা মহামারির কারণে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখার লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের ডিপিসি প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় কিস্তির ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসেবে দ্রুত ছাড় দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়। বিশ্বব্যাংকও এ বিষয়ে আশ্বস্ত করে যে বাংলাদেশের বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখা হবে।
    অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের গৃহীত দ্রুত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।

    অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, প্রকল্পের প্রয়োজনীয় শর্তাবলীর অধিকাংশই ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। বাকি শর্তগুলো শিগগিরই পূরণ করা সম্ভব হবে।
    অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, আইডিএ-১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ কোর আইডিএ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার এবং এসইউএফ থেকে আরো ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যা আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একক সর্বোচ্চ পরিমাণ। তিনি আইডিএ-১৯ এর আওতায় বাংলাদেশকে বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি পরিমাণে বরাদ্দ দিতে অনুরোধ করেন। এর আগে গত মার্চ মাসে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত দাতারা বিভিন্ন ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ঋণ ও অনুদান- দু’টিই পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক সর্বোচ্চ ১৬০ কোটি ডলার দিয়েছে, যা করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খরচ হচ্ছে। গত জুন মাসেই সংস্থাটি দিয়েছে ১৫০ কোটি ডলার। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে করোনা মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক দিয়েছে আরো ১০ কোটি ডলার। চীনের নেতৃত্বে গঠিত এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এপ্রিল মাসে ১৭ কোটি ডলার দিয়েছে।