১৫ রাষ্ট্র বিশ্বের সবথেকে বড় বাণিজ্য জোটে

    বাংলাদেশ মেইল ::

    ১৫ রাষ্ট্র মিলে গঠন করেছে বিশ্বের সবথেকে বড় বাণিজ্য জোট। বিশ্বের মোট অর্থনীতির তিন ভাগের এক ভাগই এই জোটের অন্তর্ভুক্ত। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘রিজিওনাল কমপ্রিহিনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ’ বা আরসিইপি। এতে রয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ১০ রাষ্ট্র। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে বিশ্বে বাণিজ্যের ধরণ পালটে যাবে। বাণিজ্যের মৌলিক পরিবর্তন আসবে এবং তার প্রভাব হবে দীর্ঘস্থায়ী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
    খবরে বলা হয়েছে, চীন থাকায় এই জোটে নেই যুক্তরাষ্ট্র।

    অপরদিকে চীনের পণ্যে দেশ ছেয়ে যাবে এই উদ্বেগ থেকে এই জোটে যোগ দেয়নি ভারত। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন এ জোটের কারণে এ অঞ্চলে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাবে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রা¤েপর পূর্বসরি বারাক ওবামা প্রশাসন এ জোটে যোগ দেয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিল। সেটিও ছিল, চীনের অর্থনৈতিক প্রভাবকে খর্ব করার উদ্দেশ্যেই।
    গত ৮ বছর ধরে আরসিইপি নিয়ে দর কষাকষি চলছে। অবশেষে রোববার এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। ভিয়েতনামে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সরকার প্রধানদের সম্মেলনের সাইডলাইনে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতারা আশা করছেন, নতুন এই বাণিজ্য চুক্তি করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে।
    বিবিসি জানিয়েছে, নতুন এই জোটের অর্থনীতির আকার বিশ্বের মোট জিডিপির ৩০ শতাংশ। ফলে, এই চুক্তি বিশ্বের সবথেকে বৃহৎ অবাধ বাণিজ্য এলাকা তৈরি করবে। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা এবং মেক্সিকোর মধ্যে যে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল রয়েছে সেটি কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের থেকেও এশিয়ার নতুন এই বাণিজ্য অঞ্চলটির পরিধি বড় হবে।
    ব্যবসা বিষয়ক পরামর্শক সংস্থা আইএইচএস মারকিটের এশিয়া-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাজিব বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই অঞ্চলে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের উদারীকরণে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। আরসিইপি বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অঞ্চলে পরিণত হবে।
    ২০১২ সালে প্রথম এই চুক্তির প্রস্তাব করা হয়। গত ৮ বছরে ধরে এটি কার্যকরে প্রবলভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছে চীন। মুক্ত বাণিজ্যের এই চুক্তিকে এশিয়া-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তারের পথে একটি ক্যু বা অভ্যুত্থান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে থাইল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষ দৈনিক ব্যাংকক পোস্ট। এ নিয়ে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বাণিজ্যের অধ্যাপক আলেকজান্ডার ক্যাপ্রি ব্যাংকক পোস্টকে বলেন, এই জোট চীনকে তাদের ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়নে নিশ্চিতভাবে সাহায্য করবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন চুক্তিটি হলে ভবিষ্যতে এশিয়ায় বাণিজ্যের নীতি এবং শর্ত নিয়ন্ত্রণ করবে চীন। ওয়াশিংটনের গবেষণা-ভিত্তিক সাময়িকী দি ডিপ্লোম্যাট লিখেছে, এশিয়ায় প্রধান দুই বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র নেই। ফলে এশিয়ায় বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের শর্ত ও মান নির্ধারণের ক্ষমতার হাতবদল হবে। চীন কয়েক প্রজন্ম ধরে নিজের মতো করেই এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালাবে।