চট্টগ্রামে টিকাদান কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা

    বাংলাদেশ মেইলঃঃ

    নানান অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের চলছে করোনার টিকাদান কার্যক্রম। সংকীর্ণ স্থানে বুথ বসানোয় অপেক্ষমাণ মানুষকে দাঁড়াতে হচ্ছে ঘেঁষাঘেঁষি করে।

    এছাড়া টিকা দেওয়ার পর পর্যবেক্ষণ বুথেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না বলে জানান টিকা নিতে আসা আগ্র্রহীরা।  হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকায় টিকাদান কার্যক্রমে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

    চমেক হাসপাতালে টিকা নিতে আসা আফরোজা বেগম নামে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় অনেক সমস্যা আছে। কোনো সিরিয়াল দেওয়া হয়নি।

    এছাড়াও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও সৌভাগ্যবান যে, আমরা অনেক দেশের আগে টিকা নিতে পারছি।

    চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে জোছনা দাশ নামে পঞ্চাষোর্ধ্ব এক নারী বলেন, সকাল সাতটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রথমে এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বলেছে সিরিয়াল নিতে হবে না। পরে দেখলাম পিছন থেকে একজন এসে ভিতরে ঢুকে গেছে। এখানে তো নিয়মশৃঙ্খলার ব্যঘাত ঘটছে। ডাক্তার-নার্সদের যদি স্বজনপ্রীতি বেড়ে যায় তাহলে আলাদা কার্ড দিতে পারতো। আমরা চাই, টিকা গ্রহণের ব্যবস্থাপনা যাতে সুষ্ঠু হয়। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, সেটা অন্যদের বুঝা উচিত।

    তিনি অভিযোগ করেন, ডাক্তার-নার্সদের স্বজন হবে বলে আগে দিতে পারবে আর আমাদের ডাক্তার-নার্স পরিচিত নাই বলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবো, তা তো হতে পারে না।

    রফিবুল ইসলাম নামে চট্টগ্রাম শিপিং করপোরেশনের সাবেক এক কর্মকর্তা  বলেন, টিকা নেওয়ার পর কোনো ধরনের সমস্যা বোধ করছি না। তবে ব্যবস্থাপনাটা আরও ভালো করতে পারতো। কারণ যারা টিকা নিতে আসছে তাদের অনেকে বয়োজ্যেষ্ঠ। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব না। কিন্তু এখানে বাধ্য হয়ে একসঙ্গে অনেক মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। টিকা দানের বুথের স্থানটা আরও বড় জায়গায় বসানো দরকার।

    এমইএস কলেজের গণিত বিভাগের সাবেক শিক্ষক অমলেন্দু দত্ত। তিনি বলেন, টিকা নেওয়াটা অনেকটা যুদ্ধ জয় করার মতো পরিস্থিতি। টিকা নেওয়ার পর আধাঘণ্টা বসে বিশ্রাম নেবো কিংবা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা তা দেখার জন্য বসবো, সেই সুযোগ নেই। ফলে বাধ্য হয়ে টিকা নিয়ে বাসায় চলে যেতে হচ্ছে।

    এসব অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম  বলেন, টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের সংখ্যা বাড়ার কারণে আমরা বুথের সংখ্যাও বাড়িয়েছি। কিন্তু মানুষ বেড়ে যাওয়ায় চাপ সামলাতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। তাছাড়া অতিরিক্ত মানুষের চাপে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখাও সম্ভব হচ্ছে না।

    নগরে চমেক হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ছাড়া চসিক জেনারেল হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ছাপা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলছে।

    এছাড়া চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, নৌ-বাহিনী হাসপাতাল, বিমান বাহিনী হাসপাতাল ও বিএমএতে নিজস্ব সদস্যদের মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম চলছে।