বাংলাদেশ মেইল ::
অন্যের হয়ে জেলে থাকা সেই মিনু আক্তার সড়ক দূর্ঘটনা মৃত্যুবরন করার পর থেকে হদিস মিলছে না তার ছেলে ইয়াসিনেরও (১২)। মারা যাবার পাঁচদিন পর লাশের পরিচয় শনাক্ত হওয়াসহ নানা কারনে মিনুর মৃত্যুর বিষয়টিকে অস্বাভাবিক বলে আসছিলেন মিনুর আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ।
এখন মিনু আক্তারের ছেলে নিখোঁজ হবার ঘটনা নতুন করে রহস্য সৃষ্টি করেছে৷
মিনু আক্তারের ভাই রুবেল জানান, মিনু আপার বড় ছেলে ইয়াসিন। তার বয়স বারো বছর৷ বছর খানেক ধরে নগরীর ষোলশহর এলাকায় একটি দোকানে কাজ করতো মিনুর ছেলে। মায়ের মৃত্যুর খবরে সে ফিরে নি৷ এমন কি জেলে থেকে বের হবার পরও ছেলের সাথে দেখা হয়নি মিনুর। লকডাউনের কারনে দোকানটি বন্ধ থাকার কারনে সেখানে গিয়ে মেলেনি তার হদিস৷
প্রতিবেদককে রুবেল জানায়, ‘নিখোঁজ থাকলেও থানায় জানানোর সামর্থ্য তার নেই। নিজেই খেতে পারছি না। বোন মারা গেলো। থানায় টাকা পয়সা চাইলে দেয়া সম্ভব নয়। তাই আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া কোন উপায় নেই৷ ‘
রুবেল বলেন, মিনু আপাকে যারা জেলে পাঠিয়েছে তার অনেক শক্তিশালী। আদালতের নির্দেশে তাকে ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু সে চক্রটি তার ও পরিবারের ক্ষতি করছে। মিনুকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারা হয়েছে এমনটাই সন্দেহ আমার। ‘
গত ২৮ জুন বায়েজিদ লিংক রোড় এলাকায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হবার পাঁচদিন পর পুলিশ মিনু আক্তারের লাশ শনাক্ত করে। ততদিনে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে মরদেহ দাফনও করা হয়। লাশ দাফনের পর পুলিশ ছবি দেখালে মিনুর ভাই রুবেল তার লাশ শনাক্ত করে।
ষোলশহর স্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল তিন সপ্তাহ ধরে ইয়াসিনকে ঐ এলাকায় দেখা যায় নি। ধারনা করা হচ্ছে মিনু ১৬ জুন জেল থেকে হবার আগ থেকে নিখোঁজ ছিল মিনু আক্তারের ছেলে৷
আদালতের নির্দেশে কারাগার থেকে জেল থেকে ছাড়া পাবার পরও ছেলের সাথে মিনুর দেখা হয় নি৷ কারাগারে থাকা অবস্থায় তার ছোট ছেলে মারা যায়। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারনে তাকে ছেড়ে যায় স্বামীও।
প্রসঙ্গত, অন্য নারীর সাজা কেটে মিনু আক্তার ১৬ই জুন জেল থেকে ছাড়া পান। আর ২৮শে জুন মারা যান। বিনা অপরাধে তিন বছর জেল খেটে বের হওয়ার মাত্র তের দিনের মাথায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন চট্টগ্রামের এই অসহায় নারী। মিনু আক্তার নামে এই নারীর বিনা অপরাধে কারাভোগের ঘটনা বাংলাদেশে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছিল।