চট্টগ্রামে সফলভাবে গণ টিকাদান শেষ হয়েছে

    বাংলাদেশ মেইল ::

    সরকারি উদ্যোগে বিনামূল্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গণ টিকাদান কর্মসূচি আজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা ও বিভিন্ন উপজেলায় সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। টিকাদান কেন্দ্রে সকাল থেকে সতঃস্পূর্তভাবে মানুষের অংশ গ্রহন ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক কেন্দ্রে প্রচন্ড ভিড় দেখা গেলেও টিকাদান শেষ হয়েছে বিকেল তিনটায়।

    নারী পুরুষ ভিন্ন ভিন্ন সারিতে দাঁড়িয়ে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা গ্রহণ করেছেন। আজ নগরীতে মডার্না ও উপজেলায় সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়।

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সকাল ৯টায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৩টি করে ১২৩টি বুথ স্থাপন করা হয়। প্রতিটি বুথে ৯০০ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। এর বাইরে কর্পোরেশনের স্থায়ী ১১টি কেন্দ্রেও টিকা প্রদান করা হয়। সবমিলে আজ নগরীতে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

    সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় টিকা তদারকি কমিটি সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করেছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ এ কমিটির প্রধান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তাছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্বেচ্চাসেবক টিকাদান কেন্দ্রে কাজ করেছে।

    সকালে নগরীর পূর্ব ষোলশহর রাহাত্তরপুল এলাকায় মজিদিয়া আলিয়া মাদ্রাস সংলগ্ন কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এরপর তিনি বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

    সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলায় ১৯০টি ইউনিয়ন রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ১৩টি পৌরসভা। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিকাদান কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ৬০০ জন টিকা নিয়েছেন। টিকাদানের প্রতিটি বুথে ৫ জনের একটি টিম কাজ করেছে। এরমধ্যে ২ জন টিকাদান কর্মী এবং ৩ জন স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। আর নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ২৪৬ জন প্রশিক্ষিত ভেক্সিনেটর(টিকাদান কর্মী) ও ৩৬৯ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন।

    প্রতিটি কেন্দ্রে এনআইডি কার্ড দেখে পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক, নারী ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদান করা হয়েছে। তাছাড়া ২৫ বছরের উর্ধ্ব অনেকেই টিকা নিয়েছেন।

    সকালে নগরীর ২৭নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের সরকারি সিজিএস কলোনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে আসা মানুষের প্রচন্ড ভিড় দেখা গেছে। নারী-পুরুষ ভিন্ন ভিন্ন সারিতে দাঁড়িয়ে টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন। স্থানীয় কাউন্সিলর জাফরুল হায়দার চৌধুরী সবুজ সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করছেন। এর পূর্বে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু এ কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

    টিকা নিতে পেরে চল্লিশোর্ধ ভাসমান দোকানদার মো. শাহজাহান উচ্চাস প্রকাশ করেন। সর্বসাধারণের জন্য বিনামুল্যে ঘরের দরজায় টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করায় সে সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তার মতে, টিকা নেওয়া সম্পন্ন হলে লকডাউনের প্রয়োজন হবেনা। তখন নির্বিঘেœ সে তার ভাসমান দোকানদারী চালাতে পারবে।

    উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৭-১২ আগস্ট এ ৬ দিন দেশব্যাপী গণ টিকাদান কার্যক্রম ঘোষণা করেছে। এ সময়ের মধ্যে দেশের প্রায় ৩২ লাখ মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে। এজন্য সারাদেশে ১৫ হাজারের বেশি টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আজ দেশের ৪ হাজার ৬০০টির বেশি ইউনিয়ন, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভা, ১২টি সিটি কর্পোরেশনের ৪৩৩টি ওয়ার্ডে গণহারে টিকা প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত দেশের মোট ১ কোটি ৯৯ হাজার মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।

    বিএম/টিকাদান শেষ