হাটহাজারী মাদ্রাসায় কবর
    জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাযায় মুসল্লীর ঢল

    বাংলাদেশ মেইল ::

    হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে। ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লীর ঢল নামে জানাযায়।

    বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাত ১১ টা ২৩ মিনিটে তার জানাজা শুরু হয়।

    হেফাজত নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে জানাজা শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়৷ একারনে সাধারণ মুসল্লিদের ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। মাদ্রাসার ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ভীড়ের কারণে মরদেহ বহনকারী কফিন মাদ্রাসা মাঠ থেকে স্থানীয় ডাকবাংলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই নামাজে জানাজা পরিচালিত হয়। মুসল্লীর ঢল সামাল দিতে হিমসিম খেয়ে পড়েন স্বেচ্ছাসেবকরা।

    হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগরের প্রচার সম্পাদক আ ন ম আহমদ উল্ল্যাহ বলেন, ‘হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে হুজুরের প্রথম জানাজার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে তার লাশ ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে স্বজনদের দেখানোর জন্য পাঠানো হয়। পরিবার ও স্থানীয় হেফাজত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জানাযা ও দাফনের  সিদ্ধান্ত নেয়া হয়  ।’

    আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নামাজে জানাজার ইমামতির দায়িত্ব করেছেন তার মামা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। জানাযায় অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাও জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাযায় অংশ নেন৷

    হাটহাজারী মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, ‘ হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে হুজুরের জানাজা শেষে মাদ্রাসার ভেতর উত্তর মসজিদসংলগ্ন কবরস্থানে হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীর পাশে তাকে দাফন করা হবে।’

    বাবুনগরীর গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী মাদ্রাসা -দুই জায়গায় কবর খোঁড়া হলে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃস্টি হয়। শেষ পর্যন্ত রাত বারোটায় মাদ্রাসার কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

    এর আগে দুপুর পৌনে ১টার দিকে চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে মারা যান মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী।

    চট্টগ্রাম শহরের সিএসসিআর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. এমজাদ হোসাইন বলেন, দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে বাবুনগরীকে হাসপাতালে আনা হয়। আনার পরই আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তিনি কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন।

    ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাবুনগরী। তার বাবার নাম আবুল হাসান ও মা ফাতেমা খাতুন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে ভর্তি হন। সেখানে তিনি মক্তব, হিফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এরপর ভর্তি হন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারপর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি পাকিস্তান যান। ১৯৭৬ সালে করাচিতে জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তাখাচ্ছুছাত ফিল উলুমুল হাদিস তথা উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন।