দ্রুত স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

    স্কুল-কলেজ
    বাংলাদেশ মেইল::

    দ্রুত সম্ভব স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, ‘টিকার কোনো সমস্যা নেই। যেখান থেকে যতভাবে হোক আমরা টিকা নিয়ে আসছি। খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং সেই ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

    একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের দ্বিতীয় সেশনে বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুলের ছেলে-মেয়েদের (নিয়ে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কতগুলো নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনেই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি, যার জন্য কিছু ফাইজার টিকা ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে; আরও পৌঁছাবে। মডার্নার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তা ছাড়া অন্যান্য টিকাও আসছে।

    ‘ইতোমধ্যে টাকাও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অলরেডি ৬ কোটি টিকার টাকা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে টিকা আসতে থাকবে। কারণ এগুলো সংরক্ষণ ও প্রদানের পরিকল্পনা আমাদের নিতে হচ্ছে। এগুলো আমরা করে যাচ্ছি।’

    করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি কখনো করোনা একেবারেই কমে যাচ্ছে, আবার নতুনভাবে নতুন শক্তিতে এই ভাইরাস আসছে। সে ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। দেখা যাচ্ছে, টিকা দেয়ার পর অনেকের করোনা হয়। তবে হয়তো তা মারাত্মক নয়। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’

    তিনি বলেন, ‘টিকার কোনো সমস্যা নেই। যেখান থেকে যতভাবে হোক আমরা টিকা নিয়ে আসছি। খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং সেই ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের টিকা দেয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের ও তাদের পরিবারকেও যেন টিকা দেয়া হয়।

    ‘আমরা স্বাস্থ্যকর্মীসহ তাদের বাড়ির কাজের মানুষ, গাড়ির চালক ও পরিবারের সদস্য, সবাই যেন টিকা পায় সেই ব্যবস্থাটাও নিচ্ছি, যাতে করে কোনো মতে এই সংক্রমণটা না হতে পারে।’করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরের সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘করোনা থেকে ভালো হওয়ার পরও নানা জটিলতা রয়ে যায়। যাদের অন্যান্য রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে করোনা ঝুঁকি বাড়ায়। এ জন্য সবাইকে নিজের ভালো নিজেকে বুঝে চলতে বুঝতে হবে।’

    করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি। হ্যাঁ জানি, অনেকের বক্তব্য, অনেক কিছুই বলেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা যদি দেখেন, অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন, আমাদের এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, সেই জায়গায় এটা নিয়ন্ত্রণে আমরা যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি অনেক উন্নত দেশও কিন্তু নিতে পারেনি। এটা হলো বাস্তবতা।

    ‘আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় আছে। আমরা শুরু থেকেই সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখানে আমি বলব যার যার নিজেরও সজাগ থাকা, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এবং নিজে সাবধানে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সেগুলোর দিকেও সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

    সরকারপ্রধান বলেন, ‘করোনার প্রকোপ এখন কমেছে। কিন্তু সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে জানিয়ে সংসদ নেতা সবাইকে ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন।

    সাংসদ হাসিবুর রহমান স্বপনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাসিবুর রহমান ছিলেন কর্মীবান্ধব। মানুষের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার ছিল। তার এই অকাল মৃত্যু দেশের জন্য ক্ষতি। এই সংসদে বেশ কয়েকজন সদস্যকে হারাতে হয়েছে। বারবার শোক প্রস্তাব নিতে হচ্ছে। এটা নিয়ে বলার ভাষা নেই।’

    স্বপনের কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘কোনো আপনজন ছাড়া বাইরের কারও থেকে যদি কিডনি নিয়ে ট্রান্সপ্ল্যান্ট করানো হয়, তা শরীর সাধারণত গ্রহণ করে না। এ জন্য অনেকেই টিকতে পারে না।’দেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে সশরীরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।