প্রদীপের মৃত্যুদন্ড চেয়ে আদালত চত্বরে মানববন্ধন

বাংলাদেশ মেইল ::

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে আজ। আলোচিত এ মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে কক্সবাজার আদালত চত্ত্বরে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আয়োজিত হয় মানববন্ধন।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া সাধারণ মানুষের দাবি- ২০১৮ সালে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে টেকনাফ থানার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে অন্তত দেড় শতাধিক মানুষকে ক্রসফায়ার দিয়েছেন। এছাড়াও হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরো অনেকে। মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ে ওসি প্রদীপের সর্বোচ্চ সাজা চান তারা।

আদালত চত্বরে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কক্সবাজারের স্থানীয় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলেকে ওসি প্রদীপ ছয়টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আরো অনেক নিরীহ লোককে হয়রানি নির্যাতন করেছে।’

এছাড়া আরেক সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তাফা জানান, ওসি প্রদীপের ইয়াবা কারবারসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে ছয়টি মিথ্যা মামলা করা হয়। এছাড়া ওসি প্রদীপ তাকে ঢাকা থেকে আটক করে থানায় এনে চরম নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলায় প্রায় এক বছর জেল খাটতে বাধ্য করে। ওসি প্রদীপসহ এ মামলার সব আসামির ফাঁসির দাবি করেন তিনি।

এদিকে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল ৭ টায় সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসে দায়ের করেন।

এরপর গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।

অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। দীর্ঘ দেড় বছরে এসে এই আলোচিত মামলাটির রায় প্রদান করা হবে।