দুদকের কর্মকর্তা শরীফের চাকরিচ্যুতির ঘটনা তদন্তের দাবি সংসদে

দুদকের কর্মকর্তা শরীফের চাকরিচ্যুতির ঘটনা তদন্তের দাবি সংসদে উত্থাপন করেছেন রাশেদ খান মেনন এমপি।

দূর্নীর্তি দমন কমিশন দূর্নীতি রোধ করার বদলে দূর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। কমিশনের ৫৪ ধারাটি সংবিধানের পরিপন্থী হলেও এই ধারায় দূর্নীতি দমন কমিশন একজন উপ পরিচালককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ মার্চ)জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে এসব কথা বলেন ঢাকা ৮ এর সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন এমপি।

রাশেদ খান মেনন বলেন, দেশ আজ উন্নয়ন শিখরে আরোহন করেছে। দূর্নীতিই বর্তমানে উন্নয়ন প্রধান বাধা।

মেনন বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। কিন্তু আমাদের দেশে দুর্নীতি চরম চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে। লাভের গুড়ি পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন, এটা সন্দেহ নেই।

দুর্নীতি দমন ও অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন অধিদপ্তরকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিয়ে দুদক গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই দুদক যখন সংবিধান বিরোধী কাজ করে, অথবা তার দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য অথবা তার কার্যক্রমের মধ্যে কোন দুর্নীতিবাজকে আড়াল করার জন্য, যখন সংবিধানের বিধানের বিরুদ্ধে যান তখন আমাদের উৎকণ্ঠা হয়।

দুদকের উপপরিচালক শরীফ উদ্দিনকে ৫৪ এর (ক) ধারায় বরখাস্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করে মেনন বলেন, কোন কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়েছে। অথচ এই ৫৪ ধারাটি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে সংবিধান বিরোধী। দুদক অবশ্য আপিল করেছে। কিন্তু যে বিষয়টি বিচারাধীন, সেই বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে তাকে বরখাস্ত করা হলো। এর পরিণামে দুদকের কর্মকর্তারা সারাদেশে মানববন্ধন ও অ্যাসোসিয়েশন করল। এতে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলো। কিন্তু দুদক এই ব্যাপারে ঘা করলেন না।

তিনি বলেন, শরীফ উদ্দিন চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য দরখাস্ত করল, সেটাও মানল না। সে এখন হাইকোর্টে গেল। বিচারাধীন বিষয়ে আর কথা বলব না। কিন্তু কি কারণে একজন উপপরিচালক যাকে দুইদিন আগে অতিউত্তম কর্মচারী বলেছেন, তাকে এক কলমের খোঁচায় চাকরীচ্যুত করলেন। কারণ তিনি এমন কিছু বিষয়ে তদন্ত করছিল যার ভিত্তিতে যে বিষয়গুলো এসেছিলো, যা জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় কক্সবাজারের বিভিন্ন উন্নয়নপ্রকল্পে শরীফ উদ্দিনের করা তদন্তের বিষয়টি তুলে ধরেন মেনন। তিনি বলেন, নিশ্চয় তাকে বরখাস্ত করার পেছনে এসব কারণ রয়েছে। কারণ বরখাস্তের পরে বিষয়গুলোর পুনর্তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে দুদক। আমি জানতে চাই, আসলে কেন এটার পুনর্তদন্ত হবে? যেখানে মামলা হয়ে গেছে। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এটা কোন স্বার্থে? কোন জায়গা থেকে?

মেনন বলেন, দুদক সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন এই ধরণের অসাংবিধানিক, অনৈতিক কার্যক্রম করে তখন বিষয়টি সংসদের খতিয়ে দেখার দরকার।

এই বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেন, এইভাবে অন্যায় করলে দুদকের সাধারণ কর্মচারীরা কাজ করতে পারবে না। সংসদকে দায়িত্ব নিতে হবে দেশের দুর্নীতি দমনের জন্য।