ঢাকার অপরাধ সাম্রাজ্যে জড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের অনেক তরুন

বাংলাদেশ মেইল ::

চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশকিছু তরুন রাজধানী ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের কন্ট্রাক্ট কিলার হিসেবে নাম লিখিয়েছে।  দেশের বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ  চুক্তিভিত্তিক ফরমায়েশী খুনে তাদের ব্যবহার করে আসছে বলে জানা গেছে গোয়েন্দা পুলিশের বিভিন্ন সুত্রে।

আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসায়িক বিরোধ বা মতের ভিন্নতার কারণে খুনসহ নানা অপরাধের ঘটনায় টাকার বিনিময়ে পেশাদার সন্ত্রাসীরা অংশ নিচ্ছে।

জানা গেছে, রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিভিন্ন গ্রুপের হয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া চারজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় চাঁদাবাজিতে একক নিয়ন্ত্রণ দমাতে যৌথ কিলিং স্কোয়ার্ডের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া হয় আ. লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে। টিপু হত্যাকাণ্ডের দুদিন পরেই রানা মোল্লা বাহিনীর দুর্ধর্ষ শুটার আকাশকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। জানা গেছে,  চট্টগ্রামের পটিয়ার ছেলে সেকেন্দার শিকদার ওরফে আকাশ বসবাস করতো উত্তরার দক্ষিণখানে।

এপ্রিলের মাসের শুরুতে এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রানা গ্রুপের কয়েকজন দুর্ধর্ষ কিলারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সুত্রমতে, তাদের প্রত্যেকের বাড়ি চট্টগ্রামে হলেও ঢাকায় রানা গ্রুপের হয়ে ফরমায়েশ খাটেন। এদের মধ্যে পটিয়া উপজেলার  মৃত আবু সাইদের ছেলে আবু সাহেল শিকদার ;স্যুটার সালেহ নামে পরিচিতি পেয়েছেন আন্ডারওয়ার্ল্ডে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে  সে থাকতো রাজধানীর মিরপুরে। রাউজানের শাহজাহান সিরাজের ছেলে ইয়াসির আরাফাত সৈকত ছদ্মবেশ বসবাস করতেন রাজধানী ঢাকার রূপনগর এলাকায় । গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসীদের জিজ্ঞেসাবাদের পরে গ্রুপের অন্যএক সদস্যকে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকার গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া  হাফিজের বাড়ি চট্টগ্রামে না হলেও চট্টগ্রাম অঞ্চলে তার যাতায়াত ছিলো বলে একাধিক সুত্র জানিয়েছে।

পুলিশ সুত্রমতে, মতিঝিল এলাকার টেন্ডারবাজি, মার্কেট নিয়ন্ত্রণ ও বাড়ি নির্মাণের চাঁদাবাজির একক নিয়ন্ত্রণ দমাতে যৌথ কিলিং স্কোয়ার্ডের মাধ্যমে খুন করা হয়েছে আ. লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে। খুনে ব্যবহার করা হয়েছে কন্ট্রাক্ট কিলারদের দলটিকে।

পুলিশের তথ্যমতে, টিপু কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিলেন দুজন। মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে  আসেন তারা। এসময় তাদের মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক ছিল। ওই দুজনের একজন চালক, অন্যজন পিস্তলধারী। মাত্র ২০ সেকেন্ডে কিলিং মিশন শেষ করেন পেশাদার এই কিলাররা। মৃত্যু নিশ্চিত করে মুহূর্তেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তারা।

ডিএমপির মতিঝিল জোনের উপ কমিশনার
আ. আহাদ বলেন , গুলি ছোঁড়া ব্যক্তি পেশাদার খুনি। কারণ, প্রকাশ্যে ব্যস্ত সড়কে স্বল্প সময়ে এত গুলি ছোড়া সহজ কথা নয়। তার ছোড়া ১২ রাউন্ড গুলির ১০টিই টিপুর শরীরে লেগেছে।

সুত্রমতে,  চট্টগ্রাম শহর ও পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের সাথে গভীর সম্পর্কের কারণে রাজধানী ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নাম লেখাতে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রামের  এসব যুবকরা। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় খুন হওয়া দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী  অমিত মুহুরীও ঢাকার বিভিন্ন  সন্ত্রাসী গ্রুপের হয়ে ফরমায়েশ খেটেছিলেন। যুবলীগ কর্মী ইমরানুল করিম খুনসহ অর্ধডজন হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল চট্টগ্রামের যুবলীগ ক্যাডার অমিত মুহুরীর বিরুদ্ধে।

প্রায় ৯ বছর আগে কড়াইল টিঅ্যান্ডটি মাঠ থেকে উদ্ধার হয় চট্টগ্রামের আরেক যুবক লিয়নের লাশ। এর আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদ থেকে গ্রেফতার হয়েছিল লিয়ন । লিয়নের গ্রামে বাড়ি চট্টগ্রামে। মহাখালী, কড়াইল বস্তি, বাড্ডা, গুলশান ও বনানী এলাকায় পেশাদার খুনি হিসেবে পরিচিতি ছিল লিয়নের।  শীর্ষ সন্ত্রাসী মুকুলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল এই লিয়ন।