রাউজানে হচ্ছে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র

মেগাওয়াট

বাংলাদেশ মেইল::

চট্টগ্রাম অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে রাউজানে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় হবে ১৭৭৫ কোটি ২৬ লাখ ৪১ হাজার ৪০৮ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চীনা প্রতিষ্ঠান সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম। সূত্র জানায়, টার্ণকি ভিত্তিতে ‘বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন তহবিল’ এর অর্থায়ন করা হবে। প্রকল্পের পিডিডিড পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে পরিকল্পনা কমিশন ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর  বৈদেশিক সহায়তার পরিবর্তে জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়।

প্রকল্পটি উক্ত তহবিলের অর্থায়নের শর্ত অনুযায়ী গত ২০১৮ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নীতিগত অনুমোদন নেওয়া হয়।  প্রকল্পটি উক্ত তহবিলের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়ে অর্থ বিভাগ ২০১৯ সালের ১৬ মে ছাড়পত্র দেয়।  প্রাথমিকভাবে ৬০০ মেগাওয়াট এইচ ক্লাশ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও এ ধরনের ইক্যুইপমেন্ট প্রোভেন না হওয়ায় এর জায়গায় ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করার প্রস্তাব বিদ্যুৎ বিভাগ ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ অনুমোদন করে।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)  প্রকল্পটির ডিপিপি অনুমোদনের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রীর কাছে পাঠানো হলে তাতে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এখানে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। ৪০০ মেগাওয়াট ধারণ করার মতো জায়গা ও গ্রিড লাইন আছে বা ব্যবস্থা করা যাবে কিনা সেটা পরিস্কার নয়। যদি সম্ভব হয় তবে বাস্তবায়ন করা যায়।’ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের বিষয়ে বিউবোর সম্মতিসূচক মতামতের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ গত ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি পেট্রোবাংলা নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাউজান-হাটহাজারী ২৩০ কেভি ডাবল-সার্কিট লাইনের মাধ্যমে হাটহাজারী ২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে ইভাকুয়েট করা হবে।

সূত্র আরে জানায়, দরপত্র দাখিলের জন্য নিধারিত সময়ে ৭টি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি প্রস্তাব উন্মুক্ত করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কারিগরি প্রস্তাব যাচাই করে কারিগরি মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও আর্থিক প্রস্তাব যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করে এতে সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম, চায়না সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচিত হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের নাম সুপারিশ করে।

সূত্র জানায়, ডিপিপিতে প্রাক্কলিত দর ১,৬৪৮ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার টাকার উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে সিএনটিআইসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম কর্তৃক উদ্ধৃত দর ১৭৭৫ কোটি ২৬ লাখ ৪১ হাজার ৪০৮ টাকা দাখিল করা হয়েছে, যা ডিপিপিতে উল্লেখিত প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৭.৬৯ শতাংশ বেশি।  উল্লেখ্য, প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে ডিপিপি সংশোধন করে ডিপিপি মূল্যের অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ করা হবে। সূত্র জানায়, ১ম সর্বনিম্ন দরদাতার প্রস্তাব অনুসারে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার উৎপাদন ব্যয় হবে ১.৪১ টাকা। উল্লেখ্য, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার গড় উৎপাদন ব্যয় ছিল ৩.১৭ টাকা। ফলে সার্বিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রটি ভূমিকা রাখবে। এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।