বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না: রওশন এরশাদ

বাংলাদেশ মেইল ::

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, দেশের জনগণ উন্নতি ও শান্তির জন্য পরিবর্তন চায়, যা জাতীয় পার্টিই দিতে পারে, অবশ্যই তা বিএনপি নয়। এ সময় তিনি সাফ জানিয়ে দেন, বিএনপির সঙ্গে জোটের প্রশ্নই আসে না। থাইল্যান্ডে পাঁচ মাসের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে রোববার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির অধীনে জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উল্লেখ করে রওশন এরশাদ বলেন, আমাদের নেতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং আমি ও আমার নাবালক সন্তানসহ দলের হাজার হাজর নেতাকর্মী জেল খেটেছিলাম। তখন আমাদের জনসভাও করতে দেয়া হয়নি। ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অনেক জনসভায় হামলা চালিয়ে কতশত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই অন্ধকার দিনগুলো আমরা ভুলবো কী করে? তাছাড়া আমরা তাদের শাসনামলে ‘হাওয়া ভবনের’ দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অপতৎপরতা দেখেছি।

এ সময় জাতীয় পার্টির বিভক্ত নিয়ে কথা বলেন রওশন এরশাদ। বলেন, আমি জাতীয় পার্টির সব সদস্যকে খোলা মনে আহ্বান জানিয়েছি, যারা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নাজিউর রহমান মঞ্জু, কাজী জাফর আহমদের সঙ্গে চলে গেছেন এবং নিস্ক্রিয় হয়ে গেছেন, তাদের ফিরে আসার জন্য। ১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কঠিন ও প্রতিকূল সময়, যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন তাদের আমাদের অবশ্যই যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে।

এসব ভুল বোঝাবুঝির জন্য এবং পার্টিকে দুর্বল করতে কিছু ষড়যন্ত্র হতে পারে বলেও ধারণা জাতীয় পার্টির এই নেতার। বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০১৪ সালে দেখেছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সেই ষড়যন্ত্রগুলোকে নস্যাৎ করব এবং ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী জাতীয় পার্টি গড়ে তুলবো।’

রওশন এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির জন্য যারা কষ্ট করেছেন, জেল খেটেছেন এবং জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের সবার নিকট আমি কৃতজ্ঞ। আমি পার্টির সব এমপি, প্রেসিডিয়াম এবং অন্যান্যদের সঙ্গে যেকোনো বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবঝি দূর করতে বসবো। আমি নিশ্চিত, সেই ভুল বোঝাবুঝি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরতে পারবো। ১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কঠিন ও প্রতিকূল সময়, যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন তাদের আমাদের অবশ্যই যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে।

এ সময় বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ব্যাংককে চিকিৎসার সময় সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে রওশন এরশাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বজায় রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দুর্নীতি, অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির মতো কিছু ক্রটি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে অবগত আছেন এবং আমি মনে করি এসব বিষয় সমাধানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা আরও বেশি আন্তরিক ও সক্রিয় হবেন।