চাঁদাবাজিতে এবার দুদকের এএসআই

নাদিরা শিমু :::

এক স্বর্ণকারের কাছ থেকে টাকা নিতে গিয়ে চট্টগ্রামে দুদকের এএসআই কামরুল ইসলাম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। শনিবার (২৩ শে সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চকবাজারের হোটেল জামান থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

পাঁচলাইশ থানার সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের অলিখাঁ মসজিদ মোড় সংলগ্ন জামাল হোটেল থেকে তাকে কৌশলে আটক করে পুলিশ। পরিমল নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে টাকা দাবি করেছিলেন তিনি। এসময় নিজেকে দুদক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। দুদক কর্মকর্তা দাবি করা এই কামরুল ইসলাম, দুদক কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিলো তার কোন ব্যক্তিগত পরিচয় পত্র দেখাতে সক্ষম হননি তিনি।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা প্রতিবেদককে জানান, ‘ দুদক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিলেও, নিজের কোন পরিচয় পত্র দেখাতে পারেন নি তিনি৷ পরিমল নামের এক স্বর্ণদোকানদার থেকে টাকা চাইলে তিনি পুলিশের দারস্থ হন। পরে পুলিশ কৌশলে তাকে আটক করে। ‘

দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত না করলেও, রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তাকে পাঁচলাইশ থানায় দেখা গেছে। দুদকের সুত্র কামরুলের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। সুত্রমতে, এরআগেও চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার গণপিটুনির শিকার হন এএসআই কামরুল।

দূর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম কার্যালয়ের বেশ কিছু অসাধু কর্মচারী দীর্ঘদিন থেকে দুদকের পরিচয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। এরআগে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় একইভাবে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়েন দুদক কর্মকর্তার এক ড্রাইভারসহ কনস্টেবল । পরে, দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই কর্মকর্তা তাদেরকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করলেও গণমাধ্যমকর্মীদের তৎফরতার কারণে তা সম্ভব হয় নি৷

জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নাম ভাঙিয়ে ‘সামারি বাণিজ্যে’ সক্রিয় একটি সিন্ডিকেট। এই চক্রে সংস্থাটির কতিপয় অসাধু কর্মচারী জড়িত। তাদের সহযোগী হিসাবে আছে পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এদের কেউ কেউ বিভিন্ন সংস্থা থেকে চাকরিচ্যুতও হয়েছেন। সংঘবদ্ধ এ চক্রের সদস্যরা শুরুতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর দুদক কর্মকর্তাদের সই জাল করে তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য ভুয়া নোটিশ তৈরি হয়। সেই নোটিশ পাঠানোর পর তা নিষ্পত্তির আশ্বাস দিয়ে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। গেল জুনে দুদক মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. মোকাম্মেল হকের পিএ গৌতম ভট্টাচার্য ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য পান গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশ মেইল /নাদিরা শিমু/Ns