গাড়ি ভাঙচুর, হামলা
হুইপ সামসুর অভিযোগ, পরিকল্পিত সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে পটিয়ায়

বাংলাদেশ মেইল ::

চট্টগ্রামের পটিয়ায় আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের বর্তমান হুইপ শামসুল হক চৌধুরী তার নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নে এমন হামলার ঘটনার দাবি করেছেন তিনি। শামসুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় তার ৮ কর্মী-সমর্থক আহত হন এবং তাদের ৬টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়ার স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল হক চৌধুরী।

এসময় সামসুল হক চৌধুরী বলেন, পঁচাত্তরের পর পটিয়ায় প্রথম নৌকার বিজয় আসে আমার হাত ধরে। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে যে আস্থা রেখেছিলেন, আমি বিজয়ী হয়ে তাকে আসনটি উপহার দিয়েছিলাম। সেই থেকে মানুষের ভালবাসায় আমি টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে মানুষের সেবা করে গেছি। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় পটিয়ায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছি, অধিকাংশ সময় এলাকার মানুষের সুখে দুখে পাশে থেকেছি ও সন্ত্রাসমুক্ত রেখেছি। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে পটিয়া এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করেছেন পটিয়া আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল হক চৌধুরী এমপি।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও তার অনুসারীদের সহিংস আচরণ, হামলা ভাংচুর ও প্রচারণায় বাধা প্রদানের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম উস্কানিমূলক ও বিষোদগারমূলক বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন সভা-সমাবেশে। আমার নেতা-কর্মিদের ওপর হামলা করা, তাদের মাঠে নামতে না দেয়ার নির্দেশমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। ওনার সঙ্গে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ সুবিধাভোগী শ্রেণি জুটেছে। সন্ত্রাসীরা পটিয়ায় রীতিমতো তান্ডব শুরু করেছেন গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। বুধবার কাশিয়াইশ ইউনিয়নে গণসংযোগে গেলে তারা আমার প্রচারণার ৬-৭টি গাড়ির টায়ার কেটে দেয়। প্রকাশ্যে দিবালোকে রাম দা, কিরিচ ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসে হামলা চালায়। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। একজন ইউপি চেয়ারম্যান এ হামলায় নেতৃত্ব দেন। আমরা এইসকল ঘটনা নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং একটি ঘটনার ইতিমধ্যে মামলা দায়ের হয়েছে।

শামসুল হক চৌধুরী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য নিজেদের অফিস, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরসহ নানা প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকান্ড ঘটানোর পরিকল্পনা করছে, আমি সেটা নিয়ে জিডি করবো। যতকিছুই তারা করুক, আমাকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে পারবেনা। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুক, আমার কোনো দুঃখ নেই। তিনি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থেকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা পরিষদ সদস্য দেবব্রদ দাশ দেবু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজন চক্রবর্তী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, কোলাগাঁও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু ছালেহ চৌধুরী, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হারুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর খালেদ, ব্যাংকার ওমর সুলতান চৌধুরী।