শ্রম আইন লঙ্ঘন
ড. ইউনূসের ছয় মাসের কারাদণ্ড

বিশেষ প্রতিনিধি :::

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার রায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত।  সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শ্রম আদালতের বিচারক রায় ঘোষণা করেন।  ঢাকার তিন নম্বর শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত রায়ে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ।

আদালত বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

এই সময় অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্য অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বহুল আলোচিত এই মামলায় পর্যবেক্ষণে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। ওই দিন মামলার আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্কসহ চূড়ান্ত শুনানি গ্রহণ শেষ হয়।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করেন তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। অন্যদিকে শ্রমিকদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। তারা তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরে শুনানিতে বলেন, ড. ইউনুস শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিকদের কল্যাণ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা কোম্পানি আইনেরও লঙ্ঘন। শ্রমিকদের করা মামলায় বিচার হচ্ছে। শ্রমিকরা যাতে ন্যায্য বিচার পায় সেটা নিশ্চিত করাই শ্রম আদালতের দায়িত্ব।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ড. ইউনূস ছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ৬ জুন এই মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন ড. ইউনূস ও অন্যরা। আপিল বিভাগ গত ২০ আগস্ট সেই আবেদন চূড়ান্তভাবে খারিজ করে দেন।এরপর ২২ আগস্ট শ্রম আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। যা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। এতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের চারজন কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন।