সরকার নির্ধারিত দাম মানছেন না কেউই
দাম নিয়ে বাজারে তালগোল

বাংলাদেশ মেইল :::

চট্টগ্রাম শহর ও পাশ্ববর্তী উপজেলার বাজারে সরকার যে ২৯টি পণ্য মূল্য নির্ধারন করে দিয়েছেন তা মানছেন না বিক্রেতারা। কৃষি বিপপন অধিদপ্তর নির্ধারন করা দাম মানা নিয়ে প্রতিদিনই ক্রেতা বিক্রেতার বিবাদ বাড়ছে বাজারে।

অধিদপ্তরের দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা।একইভাবে গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা।ডিমের (এক পিস) উৎপাদন খরচ ৮ টাকা ৮১ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম ৯ টাকা ৫ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৯ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ টাকা ৪৯ পয়সা।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়  পুরোনো পরিবেশ মাংসের বাজারে।  গরুর মাংসে কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এই বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের সাফ কথা, লস দিয়ে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে গরুর মাংস।

এছাড়া বয়লার মুরগী কেজিতে ৩৫ টাকা কক মুরগি কেজিতে ৩৮টাকা বেশি বিক্রি করছেন মুরগীর ব্যবসায়ীরা। চকবাজার, কাজিরদেউড়ী,বহদ্দারহাট, ষোলশহর বাজার ঘুরে দেখা গেছে  মুদি বাজারের প্রতিটি পন্যই নির্ধারিত দামে চাইতে বেশি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

উল্টো কোনো বাতচিৎ ছাড়াই হঠাৎ ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে বাজারের চলমান আগুন দামে যেন ঘি ঢেলেছে। বিতর্কের মুখে পড়েছে মূল্য তালিকা; তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। অসামঞ্জস্যপূর্ণ এ তালিকা ধরে অভিযানে গিয়ে তালগোল পাকাচ্ছে অন্য সংস্থা।  সরকারের হুঁশিয়ারি, অভিযান আর পণ্য আমদানিতেও বাজার পরিস্থিতি বাগে না আসায় ক্রেতারা ক্ষোভে ফুঁসছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে ২৯ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয় গত শুক্রবার। তবে বিক্রেতারা ওই নির্দেশনা আমলে না নিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো পণ্য বিক্রি করছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামের  চকবাজার  বাজার, ষোলশহর  মার্কেট ও কাজির দেউড়ী  বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৫.৩০ টাকা নির্ধারণ হলেও বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা, গরুর মাংসের কেজি ৬৬৪.৩৯ টাকার জায়গায় ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি রসুন ১২০.৮১ টাকার বদলে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, আমদানি করা আদা ১৮০.২০ টাকার স্থলে ২২০ টাকা, শুকনো মরিচ ৩২৭.৩৪ টাকার জায়গায় ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে ৪৯.৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বেগুনের দাম। তবে এখনও প্রতি কেজি বেগুনের জন্য ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কমার বদলে ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে আলুর দাম। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে ২৮.৫৫ টাকা হওয়ার কথা প্রতি কেজি আলু। তবে গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু এ সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা চিড়া। তবে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা।

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একমাত্র কমে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। নির্ধারিত দামের চেয়ে হালিপ্রতি দুই টাকা কম পাচ্ছেন ক্রেতারা। খোলাবাজারে ৪০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে ডিম। দেশি পেঁয়াজ ৬৫.৪০ পয়সা নির্ধারণ হলেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।তবে কাঁচা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় আছে মরিচ, পিয়াজ, আদা,রশুনের দামে। মসলার বাজারেও দামের আগুন নিভেনি।

পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করলেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে নির্ধারিত দামে পণ্য কিনতে না পারায় খুচরা পর্যায়েও নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। আর দ্রব্যমূল্য নিয়ে ক্রেতাদের আক্ষেপ বাড়ছেই।

এ বিষয়ে সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম  বলেন, ‘বাজারে এই পণ্যগুলোর চাহিদা বেশি, সেজন্য এগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বাজার মনিটরিং এর কাজ করছে মাঠ প্রশাসন। ‘