চসিকে নতুন সচিব, দায়িত্ব পেলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী

বাংলাদেশ মেইল :::

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নতুন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শিপিং কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক  আশরাফুল আমিন। ২৭ শে মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবদুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত  এক প্রজ্ঞাপনে তাকে প্রেষনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। 

নানা অনিয়মে জড়িয়ে সমালোচিত হন চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ। গত আড়াই বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কর্মরত অবস্থায় সচিব খালেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগ ওঠে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল বিজ্ঞপ্তি ছাড়া শ্রমিক নিয়োগ এবং বিধি ভঙ্গ করে এক প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনা।দুই দফা বদলির পরও নিজের চেয়ার আঁকড়ে রাখেন খালেদ মাহমুদ। নিজের মেয়েকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত  একটি কলেজের লেকচারার পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন খালেদ মাহমুদ।

এদিকে, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের চাকরির মেয়াদ শেষ হবার পর  ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রকৌশলী মোহাম্মদ  শাহিনুল উল ইসলাম চৌধুরীকে। তিনি দীর্ঘদিন চসিকে কর্মরত রয়েছেন। প্রকৌশল দপ্তরে দক্ষতা,  সুনামও রয়েছে প্রকৌশলী  শাহিনের। সোমবার  ( ২৫ শে মার্চ) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী প্রকর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেয়া হয়েছে।

এলজিইডির পাবনা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় নবিউল ইসলামকে  ১৯ নভেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব এস এম নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে  প্রেষণে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিলো। কিন্তু রফিকুল ইসলাম  আইনের আশ্রয় নেয়ার কারণে প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসতে পারেন নি তিনিও। চসিকের প্রকৌশল বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  (পুর) মোহাম্মদ  শাহিনুল উল ইসলাম চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব দেবার পর জটিলতা কেটেছে চসিকে।

এদিকে,  ২০২১ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সচিব পদ থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছিলো খালেদ মাহমুদকে। এরপর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) হিসেবে প্রথমবার বদলি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বদলি ঠেকিয়ে বহাল থাকেন তিনি।

২০২৩ সালের ১৭ জুলাই খালেদ মাহমুদকে আবারও বদলি করা হয়। সেবার বদলি করা হয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান হিসেবে। একইদিন সরকারি আবাসন পরিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী শহিদুল ইসলামকে সিটি করপোরেশনের সচিব পদে পদায়ন করা হয়। তিনি যোগদান করলেও খালেদ মাহমুদ দায়িত্ব না ছাড়ার কারণে চেয়ারে বসতে পারেননি কাজী শহিদুল ইসলাম। ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট খালেদ মাহমুদের বদলির আদেশ বাতিল করা হয়। পরে কাজী শহিদুল ইসলামকে চট্টগ্রাম ওয়াসায় বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক হিসেবে পদায়ন করা হয়।

সর্বশেষ চসিক সচিব খালেদ মাহমুদকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক পদে বদলি করা হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিলো। অবশেষে বিজ্ঞপ্তি ছাড়া শ্রমিক নিয়োগ এবং বিধি ভঙ্গ করে এক প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ কাঁধে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ছাড়েন খালেদ মাহমুদ। খালেদ মাহমুদের চেয়ারে নিয়োগ পেলেন বাংলাদেশ  শিপিং কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল আমিন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রধান প্রকৌশলী নিয়ে জটিলতার কারণে গত তিনমাস চসিকের প্রকৌশল বিভাগের কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে আসে। একইভাবে সচিবের চেয়ার শুন্য থাকার কারণে দাপ্তরিক কাজকর্মের গতি কমে যায়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত প্রকৌশলীদের মধ্য থেকে শাহিনুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী  হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার কারণে স্থবিরতা কেটে যাবে  বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।