জেল থেকে বের হয়ে আরেক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

বাংলাদেশ মেইল ::

সাত বছরের শিশু সুখী। অভাবের সংসারে মায়ের সঙ্গে বোতল কুড়াতে চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকা থেকে চলে আসতো আন্দরকিল্লা-কোতোয়ালীতে। আর তাকেই বানানো হয় টার্গেট। চকলেটের লোভ দেখিয়ে কোতোয়ালীর একটি নির্জন পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণের পর জ্ঞান হারালে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে নগরের বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছে মুরাদ হোসেন নামে এক যুবক। মুরাদ হোসেন পেশায় ভাঙারি ব্যবসায়ী। কুমিল্লার মৃত গরীব হোসেনের ছেলে। তবে তিনি বর্তমানে নগরীর বাকলিয়া বউ বাজার এলাকার বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর কদম মোবারক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোস্তাফিজুর রহমান।

ধর্ষণের পর শিশু খুন, স্বীকার করল যুবক
তিনি বলেন, ‘সুখীদের বাসা বাকলিয়া থানা এলাকায়। সে প্রতিদিন তার মায়ের সাথে আন্দরকিল্লা এবং কোতোয়ালী এলাকায় বোতল কুড়াতে আসে। খুন হওয়ার আগেরদিন রাত ১২টার দিকে তার মা একটি দোকানের সামনে বসিয়ে বোতল সংগ্রহে গিয়েছিলো এবং ফিরে এসে সে তার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর গতকাল (সোমবার) রাতে ওই শিশুর লাশ পাওয়া যায় ডাস্টবিনে। আমরা ডিজিটাল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আসামিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হই। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৬টার দিকে তাকে আমরা বাকলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আসামি মীর হোসেন বিভিন্ন ভাঙারি সংগ্রহ করে ব্যবসা করে। সে এই মেয়েটিকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে ওই দোকানের সামনে থেকে কোতোয়ালী থানাধীন একটি পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। এরপর ধর্ষণের পর মেয়েটি জ্ঞান হারালে জ্ঞান ফিরে আসার আগেই তাকে হত্যা করে। এরপর লাশ গুম করার চেষ্টা করতে থাকে। ঘটনার দিন ইফতারের সময় যখন রাস্তাঘাট ফাঁকা হয় তখন লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সে লাশটিকে ডাস্টবিনের মধ্যে ফেলে দেয়।’

ফলমণ্ডি এলাকায় ডাস্টবিনে শিশুর বস্তাবন্দি লাশ
এর আগেও তিনি শিশু ধর্ষণের পর খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জানিয়ে ডিসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে খুনের কথা সে স্বীকার করেছে। সে এর আগে কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় ২০১২ সালে ধর্ষণের পরে খুনের ঘটনায় জেলও খেটেছে বলে তথ্য পেয়েছি। আমাদের মনে হয়েছে সে অভ্যাসগতভাবেই অপরাধী। সে যেখানেই সুযোগ পায় শিশুদের টার্গেট করে। এর বাইরে আর কোনো অপরাধে তিনি ইতোপূর্বে জড়িয়েছিলেন কিনা তা আমরা তদন্ত করবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সে মেয়েটিকে টার্গেট করেছে আগে থেকে। সে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে প্রায়ই মেয়েটির মা তাকে একা একা ওই জায়গায় বসিয়ে বোতল কুড়াতে যায়। আগে থেকেই সে বিষয়টি ফলো করতো। সে সুযোগে আসামি মেয়েটিকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায়।’