নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বেকার স্বামীকে হত্যা করলো স্ত্রী

বাংলাদেশ মেইল :::

স্বামী বেকার, তাই দুই সন্তানের দিকে তাকিয়ে গৃহবধূ বিউটি আক্তার নেন পোশাক কারখানায় চাকরি। তার কাঁধেই সংসারের সব দায়িত্ব। দিনের পর দিন বেকার স্বামী একসময় জড়িয়ে পড়েন মাদকে। আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সংসারের বোঝা বাড়তে থাকে। এই নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো তাদের মধ্যে। শেষমেশ সইতে না পেরে রাগের মাথায় শিল পাটা দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করেন বিউটি। এতেই মৃত্যু হয় স্বামীর।

শনিবার (৩০ মার্চ) নগরের ইপিজেড থানার নারিকেল তলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার বিউটি বেগমের (২৮) বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার গোগবাজার এলাকার কোনাপাড়া গ্রামে। স্বামী মো. শাহীনের (৩৫) সাথে নগরীর ইপিজেড থানার নারিকেল তলা এলাকার হাজী মঈনুদ্দন ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়ায় থাকতেন তিনি।

পুলিশ জানায়, মূলত ভিকটিম শাহীন বেকার থাকায় তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনমালিন্য চলে আসছিলো। স্বামী ঘরে বসে থাকায় বিউটি বেগম পোশাক কারখানায় চাকরি করে একাই সংসার চালাতেন। এর আগেই তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়েছে। এছাড়া ওই গৃহবধূ তার স্বামীর দ্বারা একাধিকবার নির্যাতনেরও শিকার হয়েছেন।

নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সুলতানা বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত কোনো হত্যা ছিল না। রাগের বশে শিল পাটা দিয়ে বিউটি তার স্বামীকে আঘাত করে। এতেই তার মৃত্যু হয়।’

খুনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের মধ্যে প্রায়ই এরকম ঝগড়া হতো। মূলত ভিকটিম শাহীন দীর্ঘদিন ধরে বেকার অবস্থায় ঘরে বসে ছিলো। তাই সংসার চালাতে আসামি বিউটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। কাজের কথা বলতে গেলেই বিউটির ওপর ওপর নির্যাতন করতো তার স্বামী। কিছুদিন আগে তাকে বটি দিয়ে কোপও দেয় শাহীন।’

‘সবশেষ গত ৩০ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একই বিষয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। সেসময় বিউটি তার স্বামী শাহীনের দিকে শিল পাটা ছুড়ে মারেন। সেটি গায়ে না লাগলেও মাটিতে পড়ে দুই টুকরা হয়ে যায়। সেখান থেকে একটি টুকরা নিয়ে রাগের বশে সে তার স্বামীর মাথায় আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে গতকাল (সোমবার) ভোর ৫টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. মারুফ মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।’ যোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।