আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি
রাউজানে মাদ্রাসার গেট বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ

বাংলাদেশ মেইল :::

চট্টগ্রামের রাউজানে কাগতিয়া মাদরাসার প্রধান প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ করছে একটি চক্র। অভিযোগ উঠেছে মাদ্রসার জায়গা দখলের হীন প্রচেষ্টায় পুলিশ প্রশাসনও নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  আদালত কর্তৃক ১৪৫ ধারা জারি করা সত্ত্বেও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কাগতিয়া মাদরাসার প্রধান প্রবেশমুখ বন্ধ করে  দেয়াল নির্মাণ করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য ৪ ঠা এপ্রিল  অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (চট্টগ্রাম উত্তর) কর্তৃক ১৪৫ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।  আদালতের সেই আদেশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অফিসার ইনচার্জ রাউজান থানা গ্রহন করে রিসিভ কপি প্রদান করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে । কিন্তু  আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে ওই চক্রটি।

এহেন ভূমিদস্যুতায় রাউজানের ওসি জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে পুলিশের সহযোগিতায় অন্যায়ভাবে এখনো মাদরাসার চলাচলের প্রধান প্রবেশমুখে দেয়াল নির্মানের কাজ সন্ত্রাসীরা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের  ডিসেম্বর সালে ওসি জাহিদ হোসেনকে জোরারগঞ্জ থানা থেকে রাউজান থানায় বদিল করা হয়। রাউজানে বদলি হয়ে আসার ৩/৪ মাসের মধ্যেই রাউজানের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাথে হাত মিলিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন এই ওসি জাহিদ হোসেন। এরআগে তার বিরুদ্ধে জামাত শিবিরের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি জোরারগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায়ও বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি আলোচিত রেহান উদ্দিন (৬৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে গণপিটুনি বলে প্রতিষ্ঠিত করে হত্যাকারীদের বাঁচাতে এফআরটি দেবার আয়োজন করেন। ২০২৩ সালের ৯ ই সেপ্টেম্বর পুকুরের মালিকানার দ্বন্দ্বে হত্যাকান্ডের শিকার ওই বৃদ্ধকে মানসিকভাবে অসুস্থ হিসেবে প্রমাণ করতে পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়াকে ভিন্ন পথে প্রবাহিত করার অভিযোগ উঠে ওসি জাহিদের বিরুদ্ধে।

মিরসরাইয়ের ইছাখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বহদ্দার গ্রামে বৃন্দু মিয়ার বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের  ঘটনা ঘটে। নিহত রেহান উদ্দিন ওই বাড়ির মৃত ছোকধন মিয়ার ছেলে। নিহতের লাশ তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত  পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে সেই চেস্টা ব্যর্থ হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রেহান উদ্দিনের সাথে স্থানীয় মাছ চাষী দাউদুল ইসলাম সিন্ডিকেটের পুকুর লিজ নিয়ে বিরোধ চলছিলো দীর্ঘদিন ধরে। পুলিশি তদন্তে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিবর্তন করা হয়েছে।  হাসপাতালে রেহান উদ্দিন ভিডিও রেকর্ডে হত্যাকারীদের নাম বলে গেলেও ওসি জাহিদ হোসেন স্পষ্ট হত্যাকাণ্ডকে গণপিটুনি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খুনের তিনমাসের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বাঁচাতে গণপিটুনির নাটক সাজিয়ে আদালতে এফআরটি দাখিল করা হয়েছে।

বদলির পর রাউজানেও একই ধরনের কেস গুম করার নজির স্থাপন করেছেন ওসি জাহিদ। সম্প্রতি রাউজানে  প্রবাসী মুছাকে মসজিদ থেকে বের করে হত্যার পর সেটিকে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। তবে গণমাধ্যম সক্রিয় হবার পর সেই চেস্টা সফল হয় নি।

স্থানীয়রা জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে একটি পক্ষকে সুবিধা দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন। ১৪৫ ধারা জারি করা বিরোধপূর্ণ  ভূমিতে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব এড়িয়ে  উল্টো সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এখনো দেয়াল নির্মাণের কাজে সহযোগিতা করছেন।

এবিষয়ে, মাদরাসা সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও সাধারন জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আদালত নির্দেশিত ১৪৫ ধারা মোতাবেক কাগতিয়া মাদরাসার প্রধান প্রবেশপথ বন্ধ করে মাদরাসার নিজস্ব জায়গা দখল করার ষড়যন্ত্রমূলক এই দেয়াল নির্মাণের কাজ সহসা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

এবিষয়ে, জানতে ওসি জাহিদ হোসেনের সাথে কযেকদফা যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেন নি।