মার্কারের কালো দাগে লুকানো ঔষুধের মেয়াদ, পিতার সচেতনতায় রক্ষা শিশুর

    মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষুধ

    চট্টগ্রাম মেইল : সচেতন এক পিতার বিচক্ষনতাই রক্ষা পেল দেড়বছরের একমাত্র শিশুটি। একটু সচেতনতার ঘাটতি হলেই ৭/৮ মাস আগে মেয়াদ চলে যাওয়া ঔষুধ সেবনে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। অবোধ শিশুটি তার ভাষায় বলতেও পারতো না তার কি হয়েছে?

    সামান্য কিছু বাড়তি টাকা উপার্জনের লোভে অলি গলিতে গড়ে উঠা ফার্মেসীতে মুনাফালোভী ঔষুধ বিক্রেতারা বিক্রি করে আসছে মেয়াদোর্ত্তীন্ন ঔষুধ। অনেকই ঔষুধের গায়ে থাকা এক্সপায়ার ডেট মার্কারের কালো রং দিয়ে ঢেকে বিক্রি করছে ৭/৮ মাস আগে ডেট চলে যাওয়া ঔষুধ। তারা একবারও ভাবছেনা তাদের কটা টাকা মুনাফা লাভের জন্য অনেকেই কষ্ট পাচ্ছে।

    এ ধরনের মুনাফালোভী এক ঔষুধ দোকানী মেয়াদোর্ত্তীন্ন ঔষুধ বিক্রির ভিডিওসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে ২১ এপ্রিল রাত ১ টা ৮ মিনিটে। গোলাম মোস্তাফা ইকবাল তার ফেসবুক পোস্টে সবাইকে ঔষুধ কেনার সময় এক্সপায়ার ডেট সম্পর্কে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে লেখেন, আজ (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আমার দেড় বছরের বাচ্চার সর্দির জন্য টেলফাস্ট সিরাপ আনতে আমার বাসার কাজের সাহায্যকারী ছেলেটিকে এলাকার ফার্মেসিতে পাঠায়। বাসার ছেলেটি ওষুধটি এনে আমার হাতে দিলে দেখি ঔষুধের এক্সপায়ার ডেট মার্কারের কালো রং দিয়ে ঢাকা।

    আমি সাথে সাথে ঔষুধটি নিয়ে ফার্মেসিতে গেলাম।সাথে একটি বডি স্প্রের বোতল নিয়ে গেলাম ( বডি স্প্রে দিয়ে মার্কারের কালো দাগ তোলা যায়)। এরপরে সবকিছু ভিডিওতে আছে।

    ভিডিওটিতে দেখা যায়, কিছুক্ষণ আগে বাসার কাজের ছেলেটির কিনে নেওয়া মেয়াদোর্ত্তীন্ন ঔষুধসহ ইকবাল ওই ফার্মেসীতে যায়।দোকানীর কাছে ঔষুধের মেয়াদ আছে কিনা জানতে চাইলে সে দীর্ঘক্ষণ নিরব ভুমিকায় থেকে জবাব দেন খেয়াল করিনি। পরে তার সামনেই বডি স্প্রে দিয়ে কালো মার্কারের ওপর স্প্রে করতেই ভেসে আসে ঔষুধটির আসল উৎপাদন তারিখ ও মেয়াদোর্ত্তীন্নের তারিখ। ২০১৬ সালের অক্টোবরে উৎপাদিত ওষুধটির এক্সপায়ার ডেট (মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ) ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেটি বিক্রি হচ্ছিল ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল। 

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সচেতন পিতা জি এম ইকবাল বলেন নগরীর চাক্তাই এলাকার কাঁচাবাজারের মুখের হক মেডিকো নামক একটি ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ এসব ঔষুধ বিক্রি করছে মুনাফালোভী ব্যবসায়ি।

    তার পোস্টের কমেন্টে একজন লেখেন, ড্রাগ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা ভোক্তা অধিকারে রিপোর্ট দিলে, তারা দোকানে অভিযান চালিয়ে আরও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বের করবে আর এটার প্রমান দেখাবেন।। জরিমানা খাবে, সাথে লাইসেন্স বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।।

    সাইফুদ্দিন মো.মিসবা কমেন্টে লিখেছেন ভাই এটার যথাযথ ব্যবস্থা নেন।খাদ্যে ভেজাল হলে রোগ বাধে আর রোগ সারাতে ঔষুধ গ্রহণ করতে হয় আর সেই ঔষধ যদি হয় বিষ তাহলে মানুষ কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে বিষ কিনে নিজের ছোট প্রাণের টুকরা বাচ্চাকে খাওয়ালে তখন দুনিয়াতে কে কার আত্মীয় বা কে কার পরিচিত তা দেখার দরকার হয়না।

    আপনি যথাযথ ব্যবস্থা নিন।ভূল চিকিৎসায় যেমন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে তেমনি ভেজাল ও মেয়াদউর্ত্তীর্ণ ঔষধেও প্রাণনাশ হয়।আল্লাহ্ সাহায্য করেছে আপনার ছোট বাচ্চাটির ক্ষতির হাত থেকে।


    প্রিন্স তাহা তার কমেন্টে লিখেন, কত বড় হারামি সে দোকানদার। বাচ্চাদের ওষুধ নিয়ে সে ২টাকা লাভের জন্য কত বড় বাটপারি করলো। সে তো খুনের মামলার আসামির মত ডেঞ্জারাস।

    এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ক্রেতা গোলাম মোস্তাফা ইকবাল বলেন, তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঔষুধ প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকারকে জানাবো এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব যাতে আর কোন মুনাফালোভী ব্যবসায়ি এক্সপায়ার ডেট মার্কারের কালো রং দিয়ে ঢেকে বিক্রি করতে না পারে।

    জিএম ইকবাল ভগুইয়ে ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোজিতে কর্মরত। তার বাসা নগরীর কোতোয়ালি থানা চাক্তাই এলাকার কাঁচাবাজার সংলগ্ন বলে জানা গেছে।

    বিএম/রাজীব সেন প্রিন্স…