৪৫ লাখ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে (ভিডিও)
    খাদ্যে ভেজালকারী ও মাদক ব্যবসায়ির মধ্যে পার্থক্য নেই : কঠোর শাস্তি দাবী সুজনের

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, বাংলাদেশে ভোগ্য পণ্যে ভেজাল চরম আকার ধারণ করেছে। শুধু ভোগ্য পণ্যই নয়, শিশু খাদ্য, প্রসাধন সামগ্রী এমনকি জীবন রক্ষাকারী ঔষুধেও ভেজাল মেশানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

    এক গবেষণায় দেখা যায় প্রতি বছর প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন রোগে শোকে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি কিডনী লিভার এবং ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হরহামেশাই। সম্প্রতি বিভিন্ন ভেজাল বিরোধী অভিযানে খাদ্যে ভেজালের ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠেছে। যা সত্যিকারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনভাবেই কাম্য নয়।

    খাদ্যে ভেজালকারী আর মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই উল্লেখ করে সুজন মাদক ব্যবসায়িদের অনুরূপ সাজা খাদ্যে ভেজালকারীদেরও প্রদানের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান। এছাড়া ভেজাল বিরোধী অভিযান সারা বছর ধরে পরিচালনা করার আহবান জানান।

    আজ ১২ মে রবিবার সকালে চট্টগ্রামের অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র চৌমুহনী কর্ণফুলী বাজার পরিদর্শনকালে তিনি এ আহবান জানান।

    জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজনের নের্তৃত্বে পূর্ব ঘোষিত পঁচা, বাসী ও ভেজাল পণ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও পরিবেশন থেকে ব্যবসায়ীদের বিরত রাখার লক্ষ্যে নাগরিক পদযাত্রার তৃতীয় দিনে আজ কর্ণফুলী বাজার থেকে শুরু করেন।

    এসময় তিনি বাজারের মাছ, মাংস, শাক সবজি এবং অন্যান্য বিক্রয় কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীদের খাদ্যে ভেজাল বন্ধ এবং পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য না নেওয়ার অনুরোধ জানান। ব্যবসায়ীবৃন্দ নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দের সাথে সহমত পোষন করেন এবং খাদ্যে ভেজাল বন্ধ এবং অতিরিক্ত মূল্য না নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

    সুজন বলেন, বিভিন্ন নামী দামী এবং আস্থা রাখার মতো প্রতিষ্ঠানও ভেজাল খাদ্য উৎপাদন এবং বিক্রয় করছে। জনগন প্রতিনিয়ত এসব ভেজাল খাদ্য সামগ্রী জেনে কিংবা অজান্তে গ্রহণ করছে। ফলতঃ বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ডাক্তারের চেম্বারে বিপুল পরিমাণ রোগীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন মানুষ রোগে শোকে ভূগছে অন্যদিকে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যদি খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল দেওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারতো তাহলে বিপুল পরিমান অর্থ সাশ্রয় হতো।

    তিনি আরো বলেন, সরকার পবিত্র রমজান মাসে জনগনের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারপরও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে তাদের হীন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে যা রাষ্ট্র বিরোধী অপরাধও বটে। এদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করা আজ সময়ের দাবী।

    সুজন বিএসটিআই পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমানিত ভোজ্যতেলসহ সকল প্রকার পণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর প্রতি আহবান জানান। নচেৎ সাধারণ জনগনকে সাথে নিয়ে এসব পণ্য বাজার থেকে জব্দ করে ধ্বংস করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে নাগরিক উদ্যোগ।

    নাগরিক পদযাত্রার তৃতীয় দিনে পদযাত্রা এবং প্রচারপত্র বিলির সময় কর্ণফুলী বাজারে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা সাধারন এবং ব্যবসায়ীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। এরপর দুপুরে তিনি নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে নগরীর সোনালী আবাসিক এলাকা, হালিশহর কে ব্লক, আই ব্লক, চান্দগাও আবাসিক এলাকার একাংশ, ফরিদার পাড়া, গোসাইলডাঙ্গা সহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার জনগনের ওয়াসার পানি না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে ওয়াসার এমডি’র সাথে স্বাক্ষাত করেন।

    ওয়াসার এমডি অভিযোগসমূহ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দ্রুততার সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস প্রদান করেন। জনাব সুজন আগামীকাল ১৩ মে সোমবার বেলা ১২ টায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সাথে তাঁর দফতরে মতবিনিময় করবেন। এতে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

    নাগরিক পদযাত্রায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, হাজী মো. ইলিয়াছ, সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী হোসেন কোম্পানী, আব্দুর রহমান মিয়া, মো. সেলিম, মো. রিজুয়ান, এজাহারুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন বাহাদুর, মোঃ শাহজাহান, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সোলেমান সুমন, সমীর মহাজন লিটন,রাজীব হাসান রাজন, শিশির কান্তি বল, জাহাঙ্গীর আলম, সফি আলম বাদশা, শেখ সরওয়ার্দী এলিন, শেখ মহিউদ্দিন বাবু, আব্দুল মালেক, হাসান মুরাদ, আশীষ সরকার নয়ন, মেহেদী হাসান সনন প্রমূখ।

    বিএম/রাজীব সেন প্রিন্স…