দাম নিয়ে অভিযোগ থাকলেও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়
    ঠাকুরগাঁওয়ে জমজমাট ঈদ বাজার

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে ক্রেতারা তাই চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। ফলে পুরো ঠাকুরগাঁও জেলা পরিণত হয়েছে ঈদ বাজারে।

    ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিংমল সর্বত্র মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে হরদম বেচাকেনা। ফলে দোকানিদের চোখে ঘুম নেই। অতিরিক্ত ক্রেতা সামলাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন রমজানের শেষের দিকে চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পাওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় আরও বেড়ে গেছে।

    পহেলা রমজান থেকে থানকাপড় ও আনস্টিচ থ্রিপিছের দোকানে ভিড় জমলেও রেডিমেড কাপড়ের দোকানগুলোতে পুরোদমে কেনাকাটা শুরু হয়েছে এ সপ্তাহ থেকেই।

    সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকটি মাকের্ট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতার ভিড়। শহরের প্রধান প্রধান সবগুলো মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষের ঢল ছিল। তবে কেনাকাটায় ব্যবসায়ী
    পরিবারগুলো আসতে শুরু করলেও এখনো আসতে পারেনি চাকরিজীবী পরিবারগুলো। কারণ এখনো মাস শেষ হয়নি, হাতে আসেনি বেতন ও ঈদ
    বোনাস। তবে দোকানিরা বলছেন, ঈদ বোনাস-বেতন এখনো হাতে না পৌঁছালেও কেনাকাটা শুরু করেছেন অনেকে।

    ঈদের প্রথম বাজার শুরু হয় থান কাপড়ের দোকানে। এর সাথে ব্যস্ততা বাড়ে দর্জির দোকানগুলোতে। রেডিমেড পোশাক কিনলে অনেক সময়ই মাপে ঠিক থাকে না। কখনো আবার মাপে ফিট করতে গিয়ে জামার ডিজাইনটাই হারিয়ে যায়। আবার দর্জিরা রেডিমেড জামা কেটে-ছেঁটে ঠিক করে দিতেও চায় না। যার কারণে নিজের মনের মতো কাপড় কিনে পোশাক তৈরি করে নেওয়াই ভালো। বলছিলেন ডলফিন টেইলাসে আসা এক শিক্ষার্থী তহুরা সিদ্দিকা সুচি। তার মতো অনেক তরুণী ঈদের পোশাক বানিয়ে পরতে পছন্দ
    করেন। কারণ তাতে ইচ্ছামতো লেস-এমব্রয়ডারি করে ভিন্ন ডিজাইন করে নেয়ারও সুযোগ থাকে।

    ঈদের জন্য জামা কিনতে আসা পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার গৃহিনী আরিফা আক্তার জানান, ঈদের বেশ কিছুদিন বাকি থাকলেও তিনি আগে
    ভাগেই এসেছেন, দাম কম পাওয়ার আশায়। তবে তিনি বেশ কয়েকটি দোকানে ঘুরে অভিযোগ করেন, এখানে বিভিন্ন পোষাকের দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে থাকা সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকার মৃত্তিকা নামে অপর ক্রেতা জানান, পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলায় যে থ্রি-পিস ১ হাজার ৫শ থেকে ৬শ টাকায় পাওয়া যায় ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ হাজার ৫শ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।

    এছাড়াও ছোট বাচ্চাদের কাপড়ের দামের ব্যাবধানও রয়েছে অনেক।

    এ প্রসঙ্গে নর্থ সাকুলার সড়কের ঘোমটা-২ এর স্বত্তাধিকারী জনি জানান, অনেকেই পন্যের দাম কম পাওয়ার আশায় আগে ভাগেই মার্কেটে এসেছেন।
    ক্রেতাদের পক্ষ থেকে দাম বেশির অভিযোগ থাকতেই পারে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পোষাকের দাম সামান্য বেশি থাকে তাই এমনটা মনে হতে পারে।

    ভিআইপি ল্যাডিস কর্ণারের ফজলুল রহমান রতন বলেন, আমরা গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী মেয়েদের যেকোনো ডিজাইনের পোশাক তৈরি করে থাকি। তবে ডিজাইন ও কাপড়ের উপর পোশাকের মজুরী নির্ভর করে। এছাড়া ঈদে আমরা ইন্ডিয়ান নায়িকাদের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক ওইন্টারনেট থেকে কিছু এক্সক্লুসিভ ডিজাইন ডাউনলোড করে ক্যাটালগ তৈরি করি। যার কারণে তরুণীরা হালফ্যাশনের পোশাক বানাতে এখানে আসে। আর ডিজাইন করা পোশাক বানাতে মজুরী তো একটু বেশি দিতেই হবে।

    জানা যায়, এখানে থ্রি-পিছ তৈরির মজুরি ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা। ব্লাউজ বানাতে লাগছে ডিজাইনভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।

    মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও এখন ফ্যাশন সচেতন। তারাও এখন পোশাক বানিয়ে পরছে । ঈদের পাঞ্জাবির পাশাপাশি অনেকেই শার্ট-প্যান্ট বানাতে ছুটছেন টেইলার্সগুলোতে।

    বিএম/গৌতম/রনী