‘দায়িত্বশীলদের’ ‘দায়িত্বহীন’ কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, ডেঙ্গু একটি বৈশ্বিক সমস্যা হলেও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে।
শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কাদের।
চলতি বছর নতুন ধরনের ডেঙ্গুর বিস্তারে উদ্বেগ ছড়িয়েছে নগর জুড়ে। বাংলাদেশের পাশাপাশি গোটা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াই এখন এই জ্বরে কাঁপছে। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্সের অবস্থাও শোচনীয়।
বাংলাদেশেও বিশেষ করে ঢাকার হাসপাতালগুলো এখন রোগীর চাপ সামাল দিতে পারছে না। যদিও সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজারের কিছু বেশি, মৃতের সংখ্যা আট। যদিও দৈনিক প্রথম আলো দাবি করেছে, আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ, মৃতের সংখ্যাও বেশি।
মশা নিধনে ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে থাকা মেয়র খোকন বৃহস্পতিবার বলেছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে ‘ছেলেধরা’র মতো গুজব ছড়ানো হচ্ছে। একই অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে মৃতের সংখ্যা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় কম। তারপরও সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
অন্য একটি আলোচনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, ‘ডেঙ্গু মশার প্রজনন রোহিঙ্গাদের মতো, তাই এটি প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।’
মন্ত্রী তাজুল ও স্বপন এবং মেয়র খোকন এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা অনেক সময় দায়িত্বহীন কথা বলে থাকি। সকলের দায়িত্বশীল কথা বলা উচিত। অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে আমরা যে নিজেদের দায়িত্ব অপেক্ষা করব এটারও কোনো সুযোগ নেই। যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে তাই কথা না বলে যার যার কাজে মনোনিবেশ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি।’
অবশ্য কাদের নিজেও জানান, ডেঙ্গু কেবল বাংলাদেশের সমস্যা না। বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম শুধু আমাদেরই ডেঙ্গু। কিন্তু এখন দেখছি তা চীন, ফিলিপাইন এমনকি ভিয়েতনাম পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। এটা এখন আর কোন দেশীয় রোগ নয়। দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবেও এর প্রকোপ বাড়ছে।’
আন্তর্জাতিক প্রকোপ বাড়লেও এটার হুমকি উপেক্ষা করার উপায় নেই মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় এই নেতা বলেন, ‘আমাদের জনগণকে আমাদেরকেই বাঁচাতে হবে। মশার উপদ্রব থেকে জনগণকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। আসলে সমন্বিতভাবে আমাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে অংশ নিতে হবে।’
‘এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে। তাই সকলকেই সতর্ক হতে হবে। ডেঙ্গুকে সহজ ভাবে দেখার কোন উপায় নেই। যারা এটা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন তাদেরকেও বলি, আসুন আমরা সকলে মিলে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলি।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
বিএম/এমআর