ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আতঙ্কে রোহিঙ্গারা

    ভারতের

    ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে পড়েছে। এদিকে, এই আইন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেরই আশঙ্কা এবার হয়তো তাদের মায়ানমার পাঠিয়ে দেবে ভারত সরকার।

    জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানী দিল্লিসহ দেশের একাধিক শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বসবাস করছেন।

    ভারতের প্রথম সারির দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি-সহ অন্যান্য রিফিউজি ক্যাম্পগুলিতে থাকা রোহিঙ্গাদের কাছে ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন ফর রিফিউজিস’-এর (ইউএনএইচসিআর)  দেওয়া শরণার্থী পরিচয়পত্র রয়েছে। এমনই এক পরিচয়পত্র নিয়ে দিল্লির একটি শিবিরে রয়েছেন ১৮ বছর বয়সী তরুণী রহিমা। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে এসেছেন তিনি।

    ওই তরুণী জানান, ছ’বছর আগে ভাইয়ের সঙ্গে ভারতে পালিয়ে আশ্রয়গ্রহণ করেছেন তিনি। তারপর থেকে এদেশেই পাকাপাকিভাবে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। বার্মিজ সেনার অত্যাচারের কথা স্মরণ করে এখনও কেঁপে ওঠেন রহিমা।

    তিনি জানান, কয়েকদিন আগে পাড়ার এক মুদিখানার রেডিওতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। তারপর থেকেই তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

    দক্ষিণ দিল্লির এই ক্যাম্পেরই আরও এক বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী সালাম। তিনি জানান, রাখাইন প্রদেশে তুলাতুলি গ্রামে তার বাড়ি। বার্মিজ সেনার অত্যাচারে কয়েক বছর আগে মায়ানমার ছাড়তে হয় তাকে।

    তিনি বলেন, আমরা সঙ্গে কিছু না নিয়ে প্রাণ হাতে করে পালিয়ে এসেছিলাম। এবার ভারতই আমাদের কাছে ঘর হয়ে উঠেছে। নয়া আইনের দরুণ আবারও কি আমাদের বাস্তুচ্যুত হতে হবে?

    প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে মায়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলা নেই। ফলে ওই সম্প্রদায়ের মধ্যে আশঙ্কা করার সঙ্গত কারণ রয়েছে। এছাড়াও, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত বছর আসামে আটক সাত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে মায়ানমার ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শুধু দিল্লি নয়, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামেও অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি নিজেদের রিপোর্টে বলেছে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জেহাদি সংগঠনগুলির যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

    সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন