বিশেষ ফ্লাইটে মানতে হবে যেসব শর্ত

    বাংলাদেশ মেইল ::

    মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী ক্রমেই জটিল রূপ ধারণ করছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)।

    জরুরি প্রয়োজন না হলে বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ব্যবসা, চিকিৎসা এবং ভ্রমণের জন্য পৃথিবীর নানা দেশে যায়। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের যাতায়াত বন্ধ রেখেছে। তারপরেও অনেকে বিশেষ ফ্লাইটে নানা দেশে যাতায়াত করছেন।

    বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে লকডাউনে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মী এবং অন্য যাদের জরুরি প্রয়োজনে বিমান ভ্রমণ করতে হবে তাদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। শনিবার (১ মে) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের হার বিবেচনায় ৩৮টি দেশে যাতায়াতের ওপর বিশেষ শর্ত আরোপ করে বেবিচক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

    প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘এয়ার বাবল’ ফ্লাইটগুলো আপাতত স্থগিত থাকবে।

    বেবিচক জানায়, বাংলাদেশে আসা ও দেশে থেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে ১০ বছর বয়সের নিচে শিশুদের বাদে সব ভ্রমণকারীকে করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই পরীক্ষা করতে হবে। কূটনৈতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে হোম বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন কেমন হবে, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে।

    বেবিচক সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড অপারেশন) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী এম জিয়াউল কবীর স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা চলমান থাকবে।

    যে ৩৮ দেশে পুনরায় ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয়া হয়েছে সেগুলোকে ‘এ’ ও ‘বি’ দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। ‘গ্রুপ-এ’তে রয়েছে ১২টি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশ। এগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, ভারত, ইরান, মঙ্গোলিয়া, ওমান, সাউথ আফ্রিকা এবং তিউনিসিয়া। এসব দেশ থেকে কেবল বাংলাদেশি প্রবাসী বা নাগরিকেরা আসতে পারবেন। তবে এর জন্য দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।

    ‘গ্রুপ-বি’তে রয়েছে ২৬টি দেশ। এগুলো হচ্ছে- অস্ট্রিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, চিলি, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, ইরাক, কুয়েত, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, নেদারল্যান্ড, প্যারাগুয়ে, পেরু, কাতার, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক ও উরুগুয়ে।

    এগুলো থেকে যে কেউ বাংলাদেশে আসতে এবং যেতে পারবেন। তবে বাংলাদেশে এলে ১৪ দিনে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন মানতে হবে। আর কাতার, বাহরাইন ও কুয়েত থেকে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিদের প্রথমে তিন দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এরপর করোনা পরীক্ষা শেষে ১১ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

    বেবিচক বলছে, এ দুই তালিকার বাইরে থাকা দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাবে। তবে ভ্রমণকারীদের করোনা নেগেটিভ সনদ রাখা এবং ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এছাড়া যাত্রা শুরুর ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ নিতে হবে।

    করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে আন্তর্জাতিক সব গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে বেবিচক। পরে প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফেরাতে আটটি দেশে শর্ত দিয়ে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় সংস্থাটি।