নোবিপ্রবির ছাত্রীকে শ্নীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১

    বিএম ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ইংরেজি ও ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এক ছাত্রীকে শ্নীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হৃদয় নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    মঙ্গলবার নোয়াখালী শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত হৃদয় নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মী-নারায়ণপুর মহল্লার আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

    মামলা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ওই ছাত্রী শহরের হাউজিং সোসাইটি এলাকায় একটি মেসে থাকেন। তিনি গ্রেপ্তার হৃদয়ের বাড়িতে গিয়ে তার ছোট বোনকে প্রাইভেট পড়াতেন। গত ২ মার্চ রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই ছাত্রী হৃদয়ের বোনকে পড়িয়ে মেসে ফিরছিলেন। পথে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কাছে তার পথরোধ করে তাকে মোটরসাইকেলে উঠতে বলে। তবে ছাত্রীটি তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে হাঁটা শুরু করেন। তখন হৃদয় তার হাত ধরে টানাটানি করে ও শ্নীলতাহানির চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে হৃদয়ের হাত থেকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। তখন হৃদয় লোহার রড দিয়ে ছাত্রীটির মাথার পেছনের অংশে কয়েকবার আঘাত করে। এতে অচেতন হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই ছাত্রী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

    এরপর দীর্ঘদিন নোয়াখালী শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে শিক্ষকদের ঘটনাটি জানান ওই ছাত্রী। পরে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।

    কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় হৃদয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ বিকেলেই হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে।

    ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হৃদয় শ্নীলতাহানির চেষ্টা করে। তাতেও ব্যর্থ হয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে। আরও বলেন, মাথায় আঘাতের কারণে তিনি এক মাস স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি হৃদয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

    সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার আসামি হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মমিনুল হক বলেন, যৌন হয়রানির শিকার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার ও বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ তাকে সহযোগিতা করেছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধীকে তার শাস্তি পেতেই হবে।

    নোবিপ্রবির সহকারী প্রক্টর ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করে এবং বিচার বিভাগকে প্রচলিত আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান যাতে করে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালী তথা যেকোনো জায়গায় নিরাপদে চলাচল করতে পারে এবং এ সকল অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হতে না হয়।

    বিএম/রনী/রাজীব