বর্ষীয়ান রাজনীতিক নুরুল আলমের প্রথম জানাজা সম্পন্ন : শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রদূত ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

    সোমবার সকালে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে অনুষ্ঠিত এ জানাজায় শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নেমেছে হাজারো মানুষের। জানাজায় অংশগ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

    প্রিয় নেতার নুরুল আলম চৌধুরীর জানাজায় আজ সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের। সকাল ১০টা বাজার আগেই জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে মানুষে ভরে যায়।

    প্রথম জানায় অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাউজান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চন্দনাইশের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সন্দ্বীপ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা, ফটিকছড়ি সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, হাসান মাহমুদ হাসনী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবব, কেন্দ্রীয় যুবলীগ সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান ফেরদৌস প্রমুখ। জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিকগণ।

    প্রস্তুতি চলছে দ্বিতীয় জানাজার। সেখানেও ইতিমধ্যে মানুষের ঢল নেমেছে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে। ফটিকছড়ি কলেজ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজাটি অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া বাদ আসর ফটিকছড়ির গোপালঘাটা মতিউর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে নিজ গ্রামের বাড়ির কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় সম্মাননার মাধ্যমে তাকে দাফন করা হবে।

    রবিবার ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে দুই ছেলে এক কণ্যা ও স্ত্রীসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছে ৭৩ বছর।

    মরহুম আলহাজ্ব নুরুল আলম চৌধুরী ফটিকছড়ির লেলাং ইউনিয়নের গোপালঘাটা গ্রামের মরহুম মতিউর রহমান চৌধুরীর ছেলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে তিনি ষাটের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন। চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান এ আওয়ামীলীগ নেতা ফটিকছড়ি থেকে ১৯৭৩ সালে তিনি সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং দেশ ও জাতির জন্য সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।

    বর্ষীয়ান রাজনীতিক নুরুল আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ১৯৭৩ সালে প্রথম বিসিএস উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। এজন্য তাকে কারাগারে যেতে হয়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০১০ সালে ওমানের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হয়। এছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ আরো বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠনসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে ছিলেন।