বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি : মায়ার জেল ও জরিমানা

    আন্তর্জাতিক মেইল : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ অর্থ পাচারের আট দফা অভিযোগে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত।

    তিন বছর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাকাতির ঘটনা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি। সে সময় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ডলারের বেশি অর্থ চুরি করা হয়। এ ঘটনায় এই প্রথমবারের মতো কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার দেশটির একটি আঞ্চলিক আদালত দেগুইতোকে দোষী সাব্যস্ত করে এ মামলার প্রতিটি ধারায় তাকে ৪ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানা করে বলে ডেইলি ইনকোয়ারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

    চারটি অজ্ঞাত ও কাল্পনিক ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলনে ও জমা দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করার অপরাধে দেগুইতো দায়ী বলে জানিয়েছেন আদালত।

    এক দশকের বেশি সময় ধরে থাকা ব্যাংকিং খাতের অভিজ্ঞতা ও লব্ধ জ্ঞান ব্যবহার করে এই কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে থেকে রিজার্ভ চুরির ওই মামলার রায়ে বলেছেন ম্যানিলার মকতী শহরের বিচারিক আদালতের বিচারক।

    ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়।

    এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে। আরেক আদেশে শ্রীলংকায় পাঠানো হয় ২ কোটি ডলার।

    শ্রীলংকায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপাইনের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগই ক্যাসিনোতে চলে যায়।

    তবে ২০১৬ সালের সিনেটের তদন্তের শুনানিতে দেগুইতো বলেন, তাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে। আরসিবিসি ব্যাংকের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ হলেই কেবল অর্থপাচার করা সম্ভব।

    দেগুইতোর আইনজীবী দিমেট্রিও কাস্টোডিও বলেন, তার মক্কেল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। সুপ্রিমকোর্টের চূড়ান্ত রায় স্থগিত করে তিনি মুক্তই থাকবেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ মামলা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাবে। দেগুইতোর জন্য এটি একেবারে সাময়িক বিপত্তি।

    এ রায়ের পর ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম বলেন, আরসিবিসি ব্যাংকের আরও ছয় কর্মকর্তা রয়েছেন, তাদের মামলা দেশটির অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করি, যা বিচারকার্যকে আরও সহজ করে দেবে।

    বিএম/রাজীব..