রাউজানে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ বাজারে নেই খেজুরের রস

    Exif_JPEG_420

    অামির হামজা, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের রাউজানে বিভিন্ন স্থানে দিন দিন হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার চিরচেনা খেজুর গাছের রস। আবহমান গ্রামবাংলার বৈচিত্র্যপূর্ণ উৎসবে গ্রামীণ জনতার খেজুর রসের উপাখ্যান, চরম প্রাণোচ্ছলতায় আসলেই ঋতুচক্র বছর ঘুরেই দেখা মিলে প্রতি বার।

    হেমন্তের শেষে শীতের ঠান্ডা পরশে মাঝেই বাঙালির কাছে খেজুর গাছের রসে নিজেকে ডুবিয়ে নেওয়ার সুন্দর এক মাধ্যম আবহমান বাংলার চাষী।
    ঘণ কুয়াশা ঢাকা কন কনে শীতের সকালে একগ্লাস খেজুর রস পানে যে অমৃত তা সবারই জানা। কিন্তু বর্তমানে বাস্তবে প্রায় অসম্ভব কারনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার খেজুর গাছ আর কিছু কিছূ স্থানে দুই-একটা থাকলেও নেই গাছি।

    রাউজান উপজেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই ছিল পর্যাপ্ত পরিমান খেজুর গাছ ছিল অনেক গাছি। কিন্তু বর্তমানে এসব গাছ-পালা কেটে তৈরী করা হচ্ছে কল-কারখানা সহ আবাসিক ভবন যাতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ।

    সরেজমিনে গিয়ে কয়েকটি গ্রামে কিছু খেজুর গাছের দেখা মিললেও মেলেনি তেমন গাছির সন্ধান। অাগের চেয়ে বর্তমানে অনেক কম।
    বিভিন্ন গ্রামের গাছি সাথে কথা বললে তারা জানান, এক সময় তাঁরা একাই ২০-৩০টি গাছ ছাটাতেন রস সংগ্রহ করার জন্য, আর এভাবেই চালাতেন তার ছোট পরিবার। কিন্তু বর্তমানে গাছের সংখ্যা খুবই কম, আগের মত রসও হয়না। এই শীত কাল গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, গ্রামীণ জীবনে শীত আসে বিশেষ করে চাষীদের কাছে সে তো বিভিন্ন মাত্রায় রূপ নিয়ে। স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় তাদের অনেক খানি খেজুর গাছের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গি বসবাস হয়ে যায়। নানা ভাবে জড়িত চাষীর জীবন সংগ্রামে বহু কষ্টের মাঝে অনেক প্রাপ্তিই যুক্ত হয় বাংলার এই জনপ্রিয় তরুবৃক্ষ খেজুর গাছ সঙ্গে।

    শীত আমেজে প্রকৃতির মাঝ হতে সংগীহিত খেজুর রস চাষীরা যেন চষে বেড়ায় সকাল, বিকেল ও সন্ধ্যায় মেঠো পথ ধরে, তারই বহিঃপ্রকাশে যেন চমৎকার নান্দনিকতা এবং অপরূপ দৃশ্য অনুভব করে তা অবশ্যই শৈল্পীকতার নিদর্শন।

    তবে এই গ্রাম-বাংলার জন-প্রিয় খেজুর গাছ দিন দিন অযন্ত-অবেহলায় রাউজান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সময়ে সাথে সাথে, এক সময় সকাল হলে দেখামিলত চাষী ভাইদের, বর্তমান সময়ে এই শৈল্পীকতার নিদর্শন যেন আমাদের থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। খেজুর গাছ বিলুপ্তি হওয়ার কারনে খেজুরের রস বিক্রেতা ও গাছি সহ আরো যারা এ ধরনের মৌসুমী পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল তারা আজ বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছে।

    তাছাড়া যেসকল খেজুর গাছ রয়েছে তাতে যে রস পাওয়া যায় তাতে চাহিদা ১ শতাংশ হবে বলে মনে হয় না। গ্রামগুলোতে জীব বৈচিত্রের সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নয়নে মানুষের সচেতনতার অভাবে গ্রাম থেকে খেজুর গাছ অনেকটা বিলুপ্তির পথে। এক সময় খেজুর গাছের রস ও তার গুড়ের খ্যাতি থাকলেও কালের বিবর্তনে সম্পুর্ন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্য।

    এখনো কিছূ কিছূ স্থানে কিছূ সংখ্যা খেজুর গাছ দেখাগেলেও মানুষের চাহিদার তুলনায় পাওয়া যায় না রস, তাই এসব গাছ থেকে তেমন একটা রস সংগ্রহ করতে গাছি ভাইদের দেখা মিলছেনা। তাই এতে শুধু খেজুর গাছ নয়, হারিয়ে যাচ্ছে অতীত ঐতিহ্য।

    বিএম/রাজীব…