শপথ না নেয়া বিএনপির ভুল সিদ্ধান্ত,আমি অবসরে গ্রামে ফিরে যাব:প্রধানমন্ত্রী

    একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী ধানের শীষের সাংসদের এখন পর্যন্ত শপথ গ্রহণ না করা তাদের রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: কম সিট পাওয়ায় বিএনপি অভিমান করে পার্লামেন্টে আসছেন না। আমার মনে হয় এটি তদের একটি রাজনৈতিক ভুল। অন্তত তারা পার্লমেন্টে এসে কথা বললে জনগণ সরাসরি তাদের কথা জানতে পারতো।

    বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নত্তের পর্বে ময়মনসিংহ-৮ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন: বিএনপি অল্প সিট পেয়েছেন সেই অভিমানে পার্লামেন্টে আসছেন না। আমার মনে হয় রাজনৈতিক একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। কারণ, জনগণ ভোটের মালিক, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। সে হিসেবেই জনগণ ভোট দিয়েছে।

    যদি তারা পার্লামেন্টে আসে, তাদের যদি কিছু বলার থাকে; তারা বলার সুযোগ পাবে। এই সুযোগটা শুধু পার্লামেন্টের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখন যেহেতু মিডিয়াতে সরাসরি যায়, সংসদ টিভিও আছে, তাদের কথা সরাসরি দেশবাসী জানতে পারবে। এই সুযোগটা কেন তার হারাচ্ছেন আমি জানিনা। আমার আহবান থাকবে যারা নির্বাচিত সদস্য তারা পার্লামেন্টে আসবেন, বসবেন যার যার কথা বলবেন।

    দেশের জনগণ আগে থেকেই নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলো দাবি করে সংসদ নেতা বলেন: আমরা চেয়েছি সকলে সম্মিলিত ভাবে দেশটাকে গড়ে তুলবো। তাই নির্বাচনের আগে সকল দলকে ডেকে একটি সুন্দর পরিবেশে বৈঠক করেছিলাম, সকলে যেন নির্বাচন করে। বিগত সময়ের গত ১০ বছরে আমাদের উন্নয়নের সুফলটা বাংলাদেশের জনগণ পেয়েছে। তাই তারা বহু পূর্বেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এবং সেই ভোটটা তারা দিয়েছে।

    ৯৭ দেশ ও বিশ্ব নেতার অভিনন্দন

    রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে তিনি এ পর্যন্ত ৯৭টি শুভেচ্ছা, অভিনন্দনপত্র, বার্তা ও ফোন পেয়েছেন। তিনি দেশ ও ব্যক্তিদের একটি তালিকাও উল্লেখ করেন।

    চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় অভিনন্দন বার্তা পাওয়া সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর অনষ্ঠিত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট বিপুলভাবে জয়লাভ করে।

    আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানগণ আমাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, ভারত, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করে শেষে বিস্তারিত তালিকা প্রদানের বিষয়টি বলেন।

    তিনি বলেন, বিশ্বনেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং উত্তোরোত্তর সমৃদ্ধির জন্য আমাদের সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা পূণর্ব্যক্ত করেছেন।

    তিনি বলেন, দশ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অভাবনীয় সাফল্য বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের জনবান্ধব নীতি ও কর্মসূচীর বাস্তবায়ন, জনগণের কঠোর পরিশ্রম এবং সহযোগিতার ফলে। তিনি বলেন, আমি যতদিন বেচে থাকবো ততদিন দেশের অব্যাহত উন্নয়ন এবং অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাব।

    অবসরে গ্রামে ফিরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী: অবসরে গ্রামে ফিরে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, গ্রামটা হচ্ছে আমাদের প্রাণ। গ্রামের সকল মানুষকে আমরা নাগরিক সুবিধা দিতে যাচ্ছি। অনেকে আবার একটু ভালো হলে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসে, এটি আমার ভালো লাগেনা। গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছি, ছোট থেকে গ্রামের কাদামাটি মেখে বড় হয়েছি। খালে ঝাঁপ দিয়ে, গাছে উঠে নানাভাবে খেলাধুলা করে গ্রামেই বড় হয়েছি। একটা পর্যায়ে হয়তো দেশে কাজে চলে এসেছি। কিন্তু গ্রামের টান কখনোই মুছে যায়নি, মুছে যায় না। এখনো মনটা পড়ে থাকে ওই প্রিয় গ্রামে। কাজেই সব সময় একটা আকাঙ্ক্ষা যখনই অবসরে যাব গ্রামে গিয়ে থাকব।