কক্সবাজারে চার লেনে উন্নীত হচ্ছে লিংকরোড-লাবনী সড়ক

    কক্সবাজারের লিংকরোড থেকে লাবনী সড়ক চার লেনে

    বিএম ডেস্ক : পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমন নিশ্চিত করতে লিংকরোড থেকে লাবনী মোড় পয়েন্ট পর্যন্ত চার লেন সড়কে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

    সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ‘লিংক রোড-লাবনী মোড় সড়ক (এন ১১০) চার লেনে উন্নীতকরণ’ নামের প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। ৯.৬৪ কিলোমিটার সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই শত ৮৮ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা।

    বিশেষ উদ্দ্যেগটি বাস্তবায়ন হলে শহরের অসহনীয় যানযট নিরসন হবে পাশাপাশি ভ্রমন পিপাসু পর্যটকরা নিরাপদে স্বল্প সময়ের মধ্যে শহরের বিভিন্ন বিনোদন স্পটগুলো পরিদর্শণ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছে স্থানীয়রা।

    কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে-প্রস্তাবিত প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৬ অক্টোবর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    সভায় দেওয়া সুপারিশের আলোকে সম্প্রতি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়। খুব শীঘ্রই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তা উপস্থাপন হবে বলে সওজ এর একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায় করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

    সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারের লিংক রোড-কক্সবাজার প্রধান সড়কটি কলাতলী মোড় হয়ে হোটেল-মোটেল জোন অতিক্রম করে লাবনী মোড়ে এসে শেষ হয়েছে। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ২০ কিলোমিটার। পর্যটন নগরীর ব্যস্ততম এ সড়কটির দুপাশেই রয়েছে কক্সবাজারের অধিকাংশ হোটেল-মোটেল।

    হোটেল-মোটেল জোনের প্রবেশ দ্বার হিসেবেই পরিচিত এ সড়কটি সারা দেশের পর্যটকবাহী বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে ৭ দশমিক ৩০ মিটার প্রস্থের সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করা খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্রকল্পের আওতায় ৮ দশমিক ২০ কিলোমিটার সড়ক ২ লেন হতে ৪ লেনে উন্নয়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে মোট ১৯৪ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের মার্চ হতে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত বছরের ২২ এপ্রিল প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    পিইসি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ মোট ২১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর হতে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠনপূর্বক অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। পরবর্তীতে এই পুনর্গঠিত ডিপিপির ওপর সে বছরের ১৬ অক্টোবর পুনরায় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    দ্বিতীয় পিইসি সভায় লাহারপুর-ঝিনুক মার্কেট-লাবনী মোড় আঞ্চলিক মহাসড়কটির যে অংশটুকু কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৪ লেনে উন্নয়নের প্রস্তাব হতে বাদ দেওয়া হয়েছে সে অংশটুকু ৪ লেনে উন্নয়নের জন্য লিংক রোড লাবনী মোড় সড়ক চার লেনের উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের অন্তভুক্ত করে সে অনুযায়ী ডিজাইন ও ব্যয় প্রাক্কলনের সুপারিশ করা হয়।

    সে অনুযায়ী কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত লাহারপুর-ঝিনুকমার্কেট-লাবনী মোড় আঞ্চলিক মহাসড়কটির বাদ পড়া ১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার অংশ ২ লেন হতে ৪ লেনে উন্নীতকরণের প্রস্তাব অন্তভুক্ত করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ডিপিপি পুনর্গঠন করেছে। ফলে প্রস্তাবিত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৬৪ কিলোমিটারে দাড়ায়।

    প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে শূন্য দশমিক ৫৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ১ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার ঘন মিটার সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, ৯ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ৪ লাখ ৮৮ হাজার সসার ড্রেন নির্মাণ, ৭ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার রোড মিডিয়ান নির্মাণ, ১০৫ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট প্রশস্থকরণ এবং ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪০ হাজার বর্গমিটার রোড মার্কিং করা হবে।

    বিএম ডেস্ক :