পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত

    বিএম ডেস্ক : ঢাকায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাটকল শ্রমিক প্রতিনিধিদের দীর্ঘ বৈঠকের পর খুলনাসহ সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

    সোমবার রাতে প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘ বৈঠকের পর ধর্মঘটসহ সকল কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

    পাটকল শ্রমিকদের ৯৬ ঘন্টার ধর্মঘট চলাকালে ঢাকা শ্রম অধিদপ্তরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

    সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় টানা ৫ ঘণ্টা আলোচনার পর উভয় পক্ষের সম্মতিতে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। মেনে নেয়া হয় শ্রমিকদের বেশির ভাগ দাবি।

    মেনে নেয়া দাবিগুলো হচ্ছে-
    ১. আগামী ১৭ মে ২০১৯ তারিখের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি ফিক্সেশন করা হবে এবং ১৮ মে ২০১৯ তারিখ খাতায় উঠবে অর্থাৎ শ্রমিকদের অনুকূলে মজুরি স্লিপ প্রদান করা হবে।
    ২. আগামী ২৫ এপ্রিল এর মধ্যে ১০ সপ্তাহের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পূর্বের হারে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে।
    ৩. পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে মিল থেকে শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরি পরিশোধের জন্য বিজেএমসির চেয়ারম্যান মিল মালিকদের নির্দেশ দিবেন।
    ৪. আগামী ৮ মে ২০১৯ তারিখ বিজেএমসিতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
    ৫. পাটকল শ্রমিকলীগ ও সিবিএ কর্তৃক ঘোষিত সকল কর্মসূচি ১৬ এপ্রিল থেকে স্থগিত করা হলো।

    বৈঠকে এসব সিদ্ধান্তে ঐক্যমত পোষণ করে স্বাক্ষর করেন বিজেএমসির চেয়ারম্যান শাহ মো. নাসিম, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান চুন্নু ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ নেতা ফজলুল হক মন্টু। বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মতিঝিলের শ্রম ভবনে সন্ধ্যা সারে ৭ টায় বৈঠক শুরু হয়ে তা শেষ হয় রাত সারে ১২টায়।

    এর আগে সোমবার সকালে যশোরের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ (জেজেআই) ও কার্পেটিং জুট মিলসের শ্রমিকেরা দ্বিতীয় দফায় ৯৬ ঘণ্টার টানা ধর্মঘট শুরু করেন। বকেয়া মজুরি আদায়, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ নন-সিবিএর ডাকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের অংশ হিসেবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট এলাকায় যশোর-খুলনা মহাসড়ক এবং খুলনা-ঢাকা রেলপথ অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

    বেলা ১১টার দিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গাড়িতে করে খুলনা থেকে যশোর-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে যশোর বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। অবরোধে তিনি কিছুক্ষণের জন্য আটকা পড়েন। তিনি গাড়িতে বসেই ঘোষণা দেন, ‘আপনারা আশ্বস্ত থাকেন, আপনাদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে বৈঠক করতে ঢাকায় যাচ্ছি।’

    বিএম/রনী/রাজীব