বরিশালে ধর্ষণের মামলা করতে গেলে ধর্ষণচেষ্টার মামলা নিল পুলিশ

    বিএম ডেস্ক : বরিশালের হিজলায় ৮ম শ্রেণির মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বখাটের বিরুদ্ধে। মেয়েটির পরিবার বলছে, বখাটে যুবক সজিব গাজীকে আটক তো নয়ই বরং ধর্ষণ মামলা করতে গেলে পুলিশ ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেয়। পরে বিচার দাবিতে আদালতে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।

    বরিশালের হিজলার প্রত্যন্ত গ্রামের ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ।মঙ্গলবার সকালে এ নিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই ছাত্রীর বাবা। অভিযোগ বখাটের যুবক সজিব গাজীর বিরুদ্ধে।

    সংবাদ সম্মেলনে ওই ছাত্রী বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী নুরুল হক গাজীর ছেলে সজিব গাজী তাকে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। ৩০শে মার্চ সন্ধ্যায় পরিবার সদস্যদের অনুপস্থিতির সুযোগে ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে।

    নির্যাতিতা কিশোরী বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সজিব গাজী আমাদের বাড়িতে আসে, তবে আমি তাকে দেখিনি। আমি ঘরে ঢুকে লাইট অফ করলে সে আমার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেছে।’ । এ সময় ছাত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সজীব পালিয়ে যায়।

    সংবাদ সম্মেলনের খবর জানতে পেরে জেলা পুলিশ সুপার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে নিজের কার্যালয়ে ডেকে নেন। এ সময় ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষাসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।

    এদিকে, ঘটনার বিচার চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে যায় মেয়েটির পরিবার। তখন ৫০ হাজার টাকায় বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দিলে রাজী না হয়ে, থানায় অভিযোগ করতে যান নির্যাতিতার বাবা। পুলিশও ধর্ষণের পরিবর্তে ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করা হয়।

    সজীব উপজেলার চরমেমানিয়া গ্রামের নুরুল হক গাজীর ছেলে ও স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

    নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাস করলাম, ধর্ষণ হওয়ার পরও আপনি ধর্ষণ লেখেননি কেনো? তারা (পুলিশ) জানান, এটা ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে। তার পর আমরা এলাকায় বিচার চাইলেও তারা কোনো বিচার করেনি।’ এ সময় আসামির বিরুদ্ধে থানায় টাকা দেয়ার অভিযোগও করেন তিনি।

    বিষয়টি সম্পর্কে বরিশালের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের গাফলতি থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    তিনি বলেন, ‘আমি ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামিসহ ঘটনায় শংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের আটকের নির্দেশ দিয়েছি। এর পর আমরা তদন্ত করে দেখবো, আমাদের পুলিশের কারো কোনো ব্যর্থতা রয়েছে কিনা। যদি অবহেলা থাকে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

    বিএম/রনী/রাজীব