বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের বর্ষপূর্তিতে সঙ্গীতসন্ধ্যা

    বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের বর্ষপূর্তিতে সঙ্গীতসন্ধ্যা

    যীশু সেন : শুদ্ধ সঙ্গীতের ধারাকে চলমান রাখার প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের ১৪ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সম্প্রতি জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সম্পন্ন হয়।

    সঙ্গীতালয়ের সভাপতি সাংস্কৃতিক কর্মী কৈলাশ বিহারী সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গুণী কথামালা ও মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত, সরকারি সিটি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হরিশংকর জলদাস।

    ডা. সুপণ বিশ্বাসের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক। বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের পরিচালক ও সঙ্গীত প্রশিক্ষক রিষু তালুকদারের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাউজান সাহিত্য পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন ইমন, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক যীশু সেন, পলাশ দে, প্রকৌশলী সুমন সেন, লায়ন ডা. প্রণব রঞ্জন বিশ্বাস, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, দোলন দাশ, টিটন ধর, দীপন দাশ প্রমুখ।

    আলোচনাকালে বক্তারা বলেন, অন্তরাত্মার পরিশুদ্ধতায় সুস্থ ধারার সঙ্গীত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবিক চরিত্র গঠনে ও অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস হতে জাতিকে মুক্ত করতে সুস্থ সঙ্গীত চর্চা অনিন্দ্যসুন্দর ভূমিকা পালন করে। সঙ্গীতচর্চা সুখের সন্ধান দেয়। অস্থির সময়ে শান্তির পরশ পেতে সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার বিকল্প নেই। শিশুদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত রাখতে হবে। এতে করে শিশুরা নৈতিক অবক্ষয় থেকে মুক্ত থেকে সুন্দর ভবিষ্যত রচনা করতে পারবে। বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয় গত ১৪ বছর ধরে শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চায় যে ভূমিকা রেখেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আলোচনা শেষে অতিথিরা যীশু সেন সম্পাদিত “সুরপুষ্প” শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।

    মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের যাদের অকুতোভয় যুদ্ধের কারণে আমরা একটি পতাকা, একটি মানচিত্র ও একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, সাত বীরশ্রেষ্ঠ তাদের অন্যতম। সাত বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে উৎসর্গিত বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের ১৪ বছর পূর্তিতে সঙ্গীতাঞ্জলি। সুদক্ষ সঙ্গীত প্রশিক্ষক, নন্দিত টিভি ও বেতারের কন্ঠশিল্পী রিষু তালুকদারের সঙ্গীত পরিচালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল।

    ‘বুদ পবন পুরবাঈ (ধ্রুপদ-কেদার রাগে)’ ও ‘দোলা লাগিল দখিনার বনে বনে (নজরুলের ছায়ানট রাগে)’ অংশগ্রহণে ছিলেন অগ্রজ প্রতীম ঐশি তালুকদার, জয়দীপ চৌধুরী, রিমন সাহা, মৌমিতা দত্ত, মণিষা সরকার, তৃষ্ণা সেন, বিজয় দেবনাথ, সুমন সেন, মৌমিতা বিশ্বাস, দুর্জয় দত্ত, সানি ধর, অধর দত্ত, চুমকী সেন, পুষ্পিতা চৌধুরী, সৌমেন মজুমদার, অর্পিতা ঘোষ, লুসিয়া নাফসি জুঁহি, দেবারতি বিশ্বাস, জয় দে, শুক্লা পাল, অমি চক্রবর্ত্তী, ইমন সেন, স্বস্তিকা দাশ, অর্পিতা দেব, তন্বী দেবী, সুষ্মিতা রায়, নবনীতা দেব, পৃথুলা বিশ্বাস, ধ্রুব পাল, অতন্দ্রিলা দে, সনাতন দাশ, নিগার সুলতানা, রবিন মিত্র, আকাশ দত্ত, শোভন বিশ্বাস ও রানা চৌধুরী।

    অনুজ প্রতীমদের হাতে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে নেড়ে নেড়ে গাইলেন ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’ তখন সত্যি গর্বে বুকটা ভরে উঠেছিলো। অংশগ্রহণে ছিলেন সৌমিক দত্ত, জয়িতা দত্ত, অনিতা ঘোষ, রুম্পা দাশগুপ্তা, অহনা মজুমদার, অনিন্দ্য রায় বিশ্বাস, প্রজ্ঞা মজুমদার, পাপিয়া পাল, কৌশিক সেনগুপ্ত, নবনীতা দাশ, ঋতম ঘোষ, তৃষ্ণা চৌধুরী, রাজ চৌধুরী, পূজা দে, প্রিয়ন্ত সেন, নাদিয়া সুলতানা, অদ্রি সেন, পূজা দাশ, অনিন্দ্য রুদ্র ও সাদনিম সুলতানা। সপ্ত বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে শুরু হয় মনমুগ্ধকর একক ও দ্বৈত সঙ্গীতানুষ্ঠান।

    বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান গ্রুপে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘মাগো ভাবনা কেন’ অর্পিতা দে, ‘আকাশে হেলান দিয়ে’ নবনীতা দাশ, ‘ধিতাং ধিতাং বোলে’ কৌশিক সেনগুপ্ত, ‘আমার মাথা নত করে’ অহনা মজুমদার, ‘জাত গেল জাত গেল বলে’ ধ্রুব পাল।

    বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট মতিউর রহমান গ্রুপে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘কে নিবি ফুল’ প্রজ্ঞা মজুমদার, ‘যবে তুলসী তলায়’ আকাশ দত্ত, ‘বাড়ির কাছে আরশি নগর’ দেবারতি বিশ্বাস, ‘নতুন পাতার’ সৌমেন মজুমদার, ‘বনের হরিণ আয়’ তন্বী দেব।

    বীরশ্রেষ্ঠ স্কোয়াড্রন লিডার রুহুল আমিন গ্রুপে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘আমি খুঁজে বেড়ায়’ শোভন বিশ্বাস, ‘একাদশীর চাঁদরে’ জয়িতা দত্ত, ‘কিনে দে রেশমী চুড়ি’ পাপিয়া পাল, ‘এসো হে সজল শ্যাম ঘন দেয়া’ নবনীতা দেব, ‘গান গাই আমার মন রে বুঝায়’ সৌমিক দত্ত।

    বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রুপে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘অনেক বৃষ্টি ঝরে’ লুসিয়া নাফসি, ‘থাকতে পার ঘাটাতে’ নিগার সুলতানা, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’ ঐশি তালুকদার, ‘দুটি মন আজ’ মৌমিতা দত্ত, ‘গুরু তোমার নাম’ সনাতন দাশ।
    বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল গ্রুপে সঙ্গীত ও গীটার পরিবেশন করেন- ‘ভুলিতে পারিনা তারে’ অর্পিতা ঘোষ গীটারে শব্দযন্ত্রের সংযোগ করে আনন্দ দিলেন অতিথি শিল্পী অরূপ তালুকদার, ‘আজ জীবন খুঁজে পাই’ ‘ও পলাশ ও শিমুল’ বিশুতোষ তালুকদার। দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেন ‘মন মোর মেঘের সঙ্গে’ বিজয় দেবনাথ ও পৃথুলা বিশ্বাস।

    বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর গ্রুপে দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘তুমি আমার প্রথম সকাল’ জয়দীপ চৌধুরী ও অমি চক্রবর্ত্তী, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’ মৌমিতা বিশ্বাস ও জয় দে, ‘ভালবাসা যত বড়’ দুর্জয় দত্ত ও শুক্লা পাল, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ ইমন সেন ও পুষ্পিতা চৌধুরী।

    বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ গ্রুপে দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ‘তুমি আমার কত চেনা’ মণীষা সরকার ও রবিন মিত্র, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো’ সুমন সেন ও তৃষ্ণা সেন, ‘পাথরের পৃথিবীতে’ অধর দত্ত ও চুমকী সেন, ‘চম্পা চামেলী’ সানি ধর ও স্বস্তিকা দাশ।

    সমগ্র অনুষ্ঠানে যন্ত্রে সহযোগিতা করেন- কীবোর্ডে: নিখিলেশ বড়ুয়া, অক্টোপ্যাডে: রনি চৌধুরী, বেইজ গীটার: তন্ময় বড়ুয়া, তবলায়: দোলন দাশ, পলাশ দে, টিটন ধর (টিটু) ও দীপন দাশ।

    বিএম/..