আমাদের পরিচালনায় দেশে শান্তি ফিরেছে : প্রধানমন্ত্রী

    বিএম ডেস্ক : আজ আমাদের পরিচালনায় দেশে শান্তি ফিরেছে। মানুষ নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল দেশের শীর্ষ পাঁচে থেকে আমরা কথা বলছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে এখন। প্রবৃদ্ধিতে অনেক দেশ ছাড়িয়ে গেছি। আগামীতে ৮ এর বেশি প্রবৃদ্ধি হবে আমাদের। সেভাবেই আমরা পরিচালনা করছি।

    শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

    জনগণ উন্নয়ন চায়। শান্তি চায়। সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। তাদের চাওয়া থেকে। দেশে শান্তি ফিরিয়েছি। উন্নয়নের জোয়ার লেগেছে। আমরা দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। তাতে আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা আর বিশ্বাস অর্জন করেছে। এজন্যই আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়। সেই আস্থা আর বিশ্বাস থেকেই আওয়ামী লীগ এবারও সরকার গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী

    আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল বিএনপি। এদের অপকর্মে দেশেটি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছিল। শান্তিতে চলাফেরা করতে পারতো না মানুষ। চুরি-ডাকাতি বা সন্ত্রাসবাদ এমনকি মাদকের বিস্তার ছিল দেশে। আয়ের তুলনায় ব্যয় ছিল বেশি মানুষের। যে কারণে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমতাচ্যূত করেছে। তাদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হলে, দেশ লুট করে খাবে- এটা বুঝতে পেরেছে জনগণ।

    বিএনপির আমলে দলটির নির্যাতনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপির আমলে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতনে বাড়িঘরে থাকতে পারেননি নেতাকর্মীরা। এমনকি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের নগদ টাকাসহ অনেক সম্পদ লুট করে নিয়ে গিয়েছিল বিএনপি। মিথ্যায় মামলায় আমাদের জর্জরিত করতে চেয়েছিল। আমাদের দলীয় কার্যক্রমের কোনো সুযোগই ছিল না। কিন্তু আমরা বিএনপির নামে কোনো মিথ্যা মামলা দিচ্ছি না। খালেদা জিয়ার মামলা আমরা করিনি। এতিমের টাকা খেয়ে পার পেয়ে যেতে পারেননি, তাদেরই লোকের দেওয়া মামলায় তিনি জেলে।

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচনি ব্যবসার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচন করতে আসেনি। তারা বাণিজ্যক্ষেত্র বানিয়েছিল। টাকা খেয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় আগ্রহ ছিল না তাদের। নির্বাচন উপলক্ষে বাণ্যিজ্য করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল বিএনপির। যা জনগণ মেনে নিতে পারেনি।

    শেখ হাসিনা আরও বলেন, নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন জরিপ বলেছিল, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসছে। আমাদেরও বিশ্বাস ছিল জনগণ আমাদের বারবার চায়। সে বিশ্বাস আমরা বাস্তবে দেখেছি। নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ২০০৮-এর নির্বাচনেও কোনো প্রশ্ন ছিল না। এছাড়া জনগণের সেবা করতেই আমরা নির্বাচন করি।

    বাণ্যিজের কারণেই বিএনপি জিততে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, লন্ডন থেকে ওহি আসে, আর সে হিসেবে বিএনপি নেতারা প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন বিপুল টাকার বিনিময়ে। এভাবে ক্ষমতায় আসা যায় না। চোর হওয়া যায়।

    আগুনের সময় উৎসুক জনতার ভিড়ের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খামাখা কিছু লোক অহেতুক ভিড় করে। এদের কারণে ফায়ার সার্ভিস ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এরা দাঁড়িয়ে থেকে সেলফি তোলে। এখানে সেলফি তোলার কী আছে বুঝলাম না। সেলফি না তুলে তারা কয়েক বালতি পানি আনলেই পারে।’

    তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন দিন আগে বহুতল ভবনে আগুন লেগেছে। বেশকিছু লোক হতাহত হয়েছেন। যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। কিছুদিন পরপরই আগুন। যদিও ছোটবেলা থেকে আমরা জানি চৈত্র-বৈশাখ মাসে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি। একটা কথা বলব, উত্তেজিত লোক ফায়ার সার্ভিসের একটা গাড়িও ভেঙে দিয়েছে। একটি গাড়ি কিনতে ৯-১০ কোটি টাকা খরচ পড়ে। ফায়ার সার্ভিস আসতে দেরি হচ্ছে কেন সে জন্য ফায়ার সার্ভিসের লোকদের মারছে। সেটা না করে এক বালতি পানি এনে নেভানোর চেষ্টা করত তাহলে ভালো কাজ করতে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, একটা অল্প বয়সী ছেলে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে। অকারণে সেখান ভিড় করে। ফায়ার সার্ভিস যেতে পারে না। ছবি তোলে, সেলফি তোলে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করুক, উদ্ধার কাজ করুক। তা না করে সেলফি তোলে। আমি অবাক হয়ে যাই। এ ধরনের ঘটনায় কীভাবে সহায়তা করা যায়, সেটা না। পরে আমি আইজিপিকে বললাম, সবাইকে যেন আহ্বান করা হয় তারা রাস্তা থেকে যেন লোকজনকে যেন সরিয়ে দেয়। পরে তারা সেটা করেছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় মিডিয়ারও ভূমিকা আছে। মিডিয়া যখন সরাসরি সম্প্রচার করে তখন মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। ভিড় বাড়ে। এই কারণে মিডিয়াকেও দায়িত্বশীল হতে হবে।

    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আরেকটা সমস্যা হলো পানির সমস্যা। যদিও ওয়াসার পানি আছে, কোনো সমস্যা হলে ওয়াসার পানি পাওয়া যায়। এই যে গুলশান লেক। এটি এখণ যেমন আছে, এক সময় দ্বিগুণ ছিল। একেকজন ক্ষমতায় আসে, জিয়া ক্ষমতায় এলো, গুলশান লেক দখল করে ফেলল। এছাড়া ঢাকায় পুকুর ছিল সেগুলো নেই। অন্তত যারা বাড়ি করছেন তাদের খেয়াল রাখতে হবে প্রত্যেকটা জায়গায় অন্তত একটা করে জলাধার যেন থাকে।

    বিএম/রনী/রাজীব