সীতাকুণ্ড সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসে দুর্নীতি : দাতা সেজে অন্যের জমি রেজিষ্ট্রারী

    সীতাকুন্ড সাব রেজিস্ট্রারী অফিসে দুর্ণীতি

    কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুন্ড :

    সীতাকুণ্ড সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসে ভুয়া জমি দাতা সাজিয়ে জমি রেজিষ্ট্রারী করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসের কর্মরত দুই বালাম লিখককে সাসপেন্ড করেছে সাব রেজিষ্ট্রার। তবে ঘটনাটি সাজানো বলে দাবি করেছেন সাসপেন্ড হওয়া দুই বালাম লিখক।

    জানা যায়, উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মৃত আবদুল্লা আল ফারুকের ওয়ারিশ সাজিয়ে কয়েকজন ব্যক্তি গত মঙ্গলবার জায়গা রেজিষ্ট্রারী করতে আসেন। ওই এলাকার নড়ালিয়া মৌজার ৩২শতক জায়গা মালিক ফারুকের ওয়ারিশ স্ত্রী খোরশেদা বেগম, ছেলে আবদুল্লা আল মামুন, আবদুল্লা আল মুমিন, আবদুল্লা আল আমিন, আবদুল্লা আল মোহাইমেন ও বিবি আয়শা সিদ্দিকা।

    দলিলে গ্রহিতা হিসাবে লেখা হয়েছে মাহামুদুন্নবী নামে এক ব্যক্তিকে। ঠিকানা লেখা আছে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের উত্তর ছলিমপুর মৃত এসকান্দর আলীর পুত্র। জায়গা রেজিষ্ট্রারী করার সময় দলিলের মোসাবিদাকারক (দলিল লেখক) আইনজীবিও সাজানো হয়েছে ভুয়া এক ব্যক্তি।

    সাব রেজিষ্ট্রার জালিয়াতির বিষয়টি নজরে আসলে তাদেরকে জেরা করতে থাকেন। খবর দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টর রায়কে। তারা বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে রেজিষ্ট্রারী অফিস থেকে পালিয়ে যায় দাতা ও গ্রহীতার নামে আসা ব্যক্তিরা। এদিকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সহযোগীতা করার সন্দেহে বুধবার সাব রেজিষ্ট্রার সাসপেন্ড করেন দিপংকর নন্দী মানিক ও তার মা শিভানী ভৌমিক। তারা দুই জনই সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের বালাম লিখক।

    তবে সাসপেন্ড হওয়া বালাম লিখক দিপংকর নন্দী মানিক বলেন, ভুয়া দাতা গ্রহীতা সাজিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রারীর সাথে আমি ও আমার মা’র কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার।

    সীতাকুণ্ড উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেন খন্দকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র দাতা সাজিয়ে অন্যের জায়গা বিক্রি করার সাথে জড়িত। অনেক দিন পূর্ব থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলেও কোন তথ্য প্রমান না থাকার কারণে ধরতে পারছিলাম না। মঙ্গলবার ভুয়া দাতা সাজিয়ে একটি দলিল রেজিষ্ট্রারী করতে আসলে বিষয়টি হাতে নাতে ধরা পড়ে। যাচাই বাচাই করার সময় ওই চক্র বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে পালিয়ে গেছে। তবে অফিসের দুই বালাম লিখক ওই চক্রের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।

    দলিল গ্রহীতা মাহামুদুন্নবী নিজেকে জায়গার ক্রেতা-বিক্রেতা দাবি করে বলেন, দোলন ও নুর মোহাম্মদ জসিম নামে দুই দালালের (ব্রোকার) মাধ্যমে জায়গাটি ক্রয় করি। উক্ত দালালদ্বয় এক আইনজীবির মাধ্যমে জায়গাট রেজিষ্ট্রারী করতে সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসে যায়। বিষয়টি তারা ভালো বলতে পারবে। তিনি আইনজীবির সাথে কথা বলতে বলেন।

    দলিলের মোসাবিদাকারক (দলিল লেখক) এড. এম আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘দলিল রেজিষ্ট্রারী করতে আমি সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসে যায়নি। তবে দলিলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, একটি চক্র দলিলে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিলো। বিষয়টি আমি জানার পর সাব রেজিষ্ট্রারকে এসব জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

    বিএম/কামরুল/রাজীব..