আগামীকাল থেকে রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু

    রাজশাহী অঞ্চলে আম পাড়ার আইনী বাধা শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) মধ্যে রাতে।

    বুধবার (১৫ মে) সকাল থেকে আম পাড়া শুরু করবেন বাগান মালিকরা। তাই শেষ সময়ে অস্থায়ী আম আড়ৎ গুলোতে কেনা-বেচার জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

    আম পাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আম ক্রেতাদের আগমন শুরু হয়েছে আড়ৎ গুলোতে। অপরদিকে অপরিপক্ক ও আমে বিষ্ক্তা কার্বাইড ব্যবহার প্রতিরোধে বাগান ও আড়ৎ গুলোতে সার্বক্ষনিক নজরদারীতে রেখেছেন স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন।

    মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী জেলার সর্ববৃহৎ আম আড়ৎ বানেশ্বর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আম ক্রয়ের জন্য বিভিন্ন ছোট বড় গোডাউন গুলোতে ধোয়া-মুছার কাজ চলছে। আবার কয়েকটি স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী ভাবে আড়ৎ ঘর। প্রতি বছর আমের আড়ৎ গুলোতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরাও শেষ মুহুর্তে আড়ৎদারদের সাথে মুজুরি দৈনিক মুজুরি নিয়ে দর কষাকষি করে নিচ্ছেন।

    স্থানীয় আড়ৎদার তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, বুধবার সকাল থেকে আম কেনা-বেচা শুরু হবে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বাগান গুলোতে আম অনেক কম ধরেছে। তার উপর মৌসুমের শুরু থেকে আম বাগান গুলোতে দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে গেছে। যার কারণে চাহিদা অনুসারে আম পাওয়া যাবে না।

    ধারনা করা হচ্ছে এবার আর্টি জাতীয় আম সর্বনিন্মে প্রতিমণ এক হাজার টাকা মন দরে কেনা-বেচা শুরু হতে পারে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপর নির্ভর করে দর কম বেশী হতে পারে।

    সিরাজগঞ্জ থেকে বানেশ্বর আড়তে আসা আম ব্যবসায়ী রাকিব হোসেন বলেন, আম মৌসুমের প্রতি বছর কয়েকটি আড়ৎ ঘুরে আম কিনে থাকি। রাজশাহী জেলার সবচে ভালো মানের আম পুঠিয়ার এই আড়ৎ গুলোতে পাওয়া যায়। এখান থেকে আম কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করে থাকি। তবে মৌসুমের শুরুতে রমজান মাস হওয়ায় চাহিদা কিছুটা কম। আশা করা যাচ্ছে ঈদের পর চাহিদা অনেক বাড়বে।

    উপজেলার বিড়ালদহ এলাকার আমচাষী সাত্তার আলী বলেন, বুধবার থেকে আম পাড়া শুরু হবে। তাই আমের বাজার দর জানতে আড়ৎ-এ এসেছি। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আম ব্যবসায়ীদের সাথেও আলাপ আলোচনা করতে আসা।

    চলতি সপ্তাহের শুরুতে জেলা প্রশাসক এক সভায় স্থানীয় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের কয়েকটি ধাপে আম ক্রয়-বিক্রয়ের নিদের্শনা দেন। সে নির্দেশনা মোতাবেক ১৫ মে থেকে আর্টি বা গুটি জাতীয় আম পাড়া শুরু করতে পারবেন। গোপালভোগ আগামী ২ মে, রানী প্রসাদ ও লক্ষণ ভোগ ২৫ মে, হিম সাগর বা ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আমরুপালি ও ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বনী আমপাড়া শুরু হবে ১ জুলাই থেকে।

    এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, কোন আম কখন পাড়তে হবে সে মোতাবেক একটি দিক নির্দেশনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক আম আড়ৎ গুলোতে মনিটরিং থাকবে। এ ছাড়া কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পেলে তৎক্ষনিক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    সম্প্রতি মহামান্য হাইকোট রাজশাহী অঞ্চলের আম বাগান গুলোতে পুলিশ পাহারার নিদের্শ দেন। যেনো মানব দেহের ক্ষতিকার কোনো রাসয়ানিক পদার্থ আমবাগান গুলোতে ব্যবহার না করা হয়। সে নিদের্শনা মোতাবেক উপজেলার বিভিন্ন আমবাগান গুলোতে বিশেষ নজরদারী শুরু করছেন পুলিশ-প্রশাসন।

    বিএম/রনী/রাজীব