যুবরাজকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান মালিক

    ঝিনাইদহে একটি খামারে ৩৫ মন ওজনের গরুর দেখা মিলেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে যুবরাজ। প্রতিদিন গরুটি দেখতে সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে ভীড় করছে উৎসুক জনতা।

    প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে যুবরাজের বাড়িতে। তার সঙ্গে সেলপি উঠানোরও হিড়িক চলছে। অনেকে আবার যুবরাজের সঙ্গে তোলা তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এ সব কারনে যুবরাজকে দেখার ভীড় বেড়েই চলেছে।

    জানা যায়, ২ বছর আগে মাত্র দেড় লাখ টাকায় গরুটি কেনেন গরুর মালিক শাহ আলম। লালন-পালন করে বর্তমানে গরুটির ওজন হয়েছে ৩৫ মন। ইতিমধ্যে গরুটির দাম হয়েছে ১৮ লাখ টাকা।

    আগামী ঈদুল আযহায় ২৫ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করার ইচ্ছা তার। প্রতিদিন তাকে খাওয়ানো হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকার খাবার। এ দুই মাসে আরও ৫ থেকে ৭ মন ওজন বাড়বে বলে আশা তার।

    যুবরাজ মূলত একটি ফ্রিজিয়ান ষাঁড়। শখ করে যার নাম রাখা হয়েছে যুবরাজ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটা একটা হাতি। ইতিমধ্যে পাইকাররা যুবরাজের দাম ১৮ লাখ টাকা হাকলেও শাহ আলম বলছেন তিনি ২৫ লাখ টাকা দামে বিক্রি করবেন।

    শাহ আলম ৫ বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। এরপর বিদেশের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসার প্রয়োজনে ৩৫ টি দেশে ঘুরেছেন তিনি। পরে ঝিনাইদহে এসে গড়ে তোলেন আব্দুল্লাহ এগ্রো এন্ড ডেইরী ফার্ম। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করে বাড়ি এবং বাড়ির সঙ্গে এই ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন। ৩ বছর হলো এই খামারে গরু লালন-পালন করেন। বর্তমানে তিনি এই খামারেই সময় দেন। এগুলো লালন-পালন করে যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালান।

    তিনি আরো জানান, বর্তমানে তার খামারে ৭ টি গরু আছে। সবগুলো গরুর আলাদা আলাদা নাম আছে। তিনি সবাইকে নাম ধরেই ডাকেন। আসন্ন ঈদুল আযাহায় তিনি যে তিনটি গরু বিক্রি করবেন সেগুলোর নাম যুবরাজ, রবি ও সাহেব। বাকি চারটা আগামী বছর বিক্রি করবেন বলে জাানন।

    তিনি বলেন, গরুগুলো তার খুব আদরের। তাদের সবকিছু নিজ হাতেই করেন। খাবার দেওয়া, ময়লা পরিষ্কার, গোসল দেওয়া সবই নিজে করেন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য তিনজন কর্মচারি আছেন। গরুগুলো অনেক বড় হওয়ায় সব কাজ করতে পারেন না। তাই অন্যদের সহযোগিতা নিতে হয়। তাদের চিকিৎসা, তাপমাত্রা ঠিক রাখা সহ সার্বক্ষনিক সতর্ক থাকতে হয়।

    শাহ আলম জানান, তিন বছর আগে তিনি এই খামার করেছেন। যুবরাজকে তিনি খামার শুরুর সময় মাত্র ৬ মাস বয়সে নিয়েছিলেন। এখন তার বয়স ৩ বছর ৬ মাস। এই সময়ে পরিমিত খাবার আর যত্ন এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন।

    তিনি বলেন, যুবরাজকে খরিদ করতে ইতিমধ্যে পাইকাররা আসছেন। তারা ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত মুল্য দিয়েছেন। তিনি আরেকটু অপেক্ষা করছেন। প্রয়োজনে হাটে উঠাবেন এবং ২৫ লাখ টাকা দাম চাইবেন। এ ক্ষেত্রে কিছু কম হলেও বিক্রি দেবেন।

    তিনি বলেন, যুবরাজের পেছনে এখন পর্যন্ত তার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রতিদিন যুবরাজের খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা।

    এ বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান জানান, তারা গরুটির ওজন আনুমানিক ৩৫ মন বলে ধারনা করছেন। ঈদ আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরো কিছু ওজন বাড়বে বলে মনে করছেন। অবশ্য গরুর ওজন আরো বেশি হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।

    শাহ আলম জানান,  এখন প্রতিদিন শত শত মানুষ তার এই গরু দেখতে আসে। এতে তার অনেক ঝামেলাও হচ্ছে, কিন্তু তারপরও তিনি খুশি।

    যুবরাজকে দেখতে আসা ওই গ্রামের বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, শাহ আলম মিয়া গরুর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নাম ধরে ডাক দিলেই গরু বুঝতে পারে। মালিক যে নির্দেশ দেন সেটাই পালন করে।

    বিএম/এমআর