রংপুরে মাধবী থেকে যখন সুমাইয়া: স্বামীর বিরুদ্ধে তখন অপহরণ মামলা

    রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরে প্রেমের কারণে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করায় মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে অপহরনের মামলা করেছে শ্বশুর সুভাষ চন্দ্র।

    ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর নগরীর ৪নং ওয়ার্ডের কুকরুল গ্রামে। এঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

    এদিকে মামলার পরে পুলিশ স্বামী মমিনুরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। গত রবিবার আদালতে স্বামী মমিনুরের পক্ষে বিজ্ঞ কৌশলী জামিন আবেদন করলে আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনার পরে তাকে জামিন প্রদান করেন।

    পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর ৪নং ওর্য়াডের আমাশু কুকরুল গ্রামের সুভাষ চন্দ্রের বড় মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা মাধবী রানীর (২৬) সাথে একই ওয়ার্ডের ছিলমল গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে মমিনুর ইসলামের (৩০) সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তারা একে অপরকে পছন্দ করায় মাধবী রানী গত ১৩ এপ্রিল নোটারী পাবলিক উপস্থিত হয়ে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে মাধবী রানী নামের পরিবর্তে সুমাইয়া আক্তার নাম ও পরিচয় নির্ধারণ করে। পরের দিন ১৪ এপ্রিল তারা ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক নোটারী পাবলিক ও নিকাহ রেজিষ্টার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
    এঘটনায় মাধবী রানীর (বর্তমান নাম সুমাইয়া আক্তার) বাবা সুভাষ চন্দ্র মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে রংপুর পরশুরাম মেট্রেপলিটন থানায় ১৮ মে তিন জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন । পুলিশ ওই দিনেই মমিনুর ও স্ত্রী সুমাইয়াকে গ্রেফতার করে ১৯ মে আদালতে হাজির করে। আদালত মমিনুরের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তারকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দিয়ে, মমিনুরকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।

    মমিনুরের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম জানান, সুমাইয়া আদালত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর স্বামী মমিনুরের বাড়িতে উঠে। গত ৫ জুন ঈদের দিনে সুমাইয়া আক্তার শ্বাশুরী ছামচ্ছুর নাহারকে সাথে স্বামীর মমিনুরকে জেল হাজতে দেখতে যায়। ফেরার পথে বাবা সুভাষ চন্দ্র মেয়েকে জোর পূর্বক তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। এঘটনায় কোতয়ালী থানার একটি সাধারণ ডাইরী করে মমিনুরের পরিবার। পরবর্তীতে ৮ই জুন রফিকুল ইসলাম ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুমাইয়াকে উদ্ধারের জন্য পরশুরাম থানায় একটি অভিযোগ করেন।

    সরেজমিনে দেখাগেছে, সুমাইয়া আক্তার বাবার বাড়ি আমাশু কুকরুলে সিথিয় সিদুর পরিহিত আতংক গ্রস্থ্য অবস্থায় রয়েছে। তার সাথে দেখা এবং কোন লোকজনকে কথা বলতে দিচ্ছে না পরিবারের লোকজন।

    এব্যাপারে সুমাইয়ার মামা মোহন চন্দ্র জানান, আমার ভাগনী মাধবী রানী ভুল করে মমিনুরের সাথে চলে গিয়েছিল। সে এখন আগের স্বামী বিপুল চন্দ্রের কাছে যেতে চায়। তার একটি সাত বছরের ছেলে সন্তানও রয়েছে। আমরা পরিবারের লোকজন বিষয়টি নিয়ে ভাবছি।

    অন্যদিকে সুমাইয়ার মা অয়ন্তী রানী বলেন, টাকার লোভে আমার মেয়েকে মমিনুর ভুল বুঝিয়ে বিয়ে করেছে। সে মেয়ের অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
    পরশুরাম থানা পুলিশের ওসি মোহছে-উল গনি বলেন, আমরা আসামী এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আদালত ভিকটিমকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে। এখন তার যেখানে ইচ্ছা সেখানে অবস্থান করতে পারবে।

    বিএম/এসআর/এমআর